মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

চলতি বছরই শুরু বে-টার্মিনাল নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

অবশেষে শুরু হচ্ছে আগামীর বন্দর খ্যাত চট্টগ্রামের বে-টার্মিনালের নির্মাণকাজ। ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে বে-টার্মিনালের মাস্টারপ্ল্যান। চূড়ান্ত হয়েছে চ্যানেলসহ সব ধরনের নকশা। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষ দিকে শুরু হবে টার্মিনাল নির্মাণকাজ। আলোচিত এ প্রকল্পটি ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।  বিনিয়োগকারীরা বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবও দিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষকে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল বলেন, ‘চলতি বছরের শেষের দিকে বে-টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু হবে। বে-টার্মিনালের পুরোটাই হবে বিদেশি বিনিয়োগে। এটি পুরোদমে চালু হলে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে সত্যিকার বন্দরনগরের রূপে দেখা যাবে। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হবে হাব পোর্ট।’ জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বে-টার্মিনালের মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে চলতি বছরের শেষের দিকে। ইতোমধ্যে বে-টার্মিনাল তৈরির জন্য ভূমি পেয়ে গেছে বন্দর। তৈরি হয়ে গেছে মাস্টারপ্ল্যানও। ১২-১৪ মিটার ড্রাফটের চ্যানেলসহ সব নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বে-টার্মিনালে চারটি টার্মিনাল করা হবে। যার মধ্যে বন্দরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আবুধাবি পোর্ট গ্রুপ ইতোমধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব করেছে। বে-টার্মিনালের কনটেইনার টার্মিনাল ১ ও ২ নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য পিএসএ সিঙ্গাপুর এবং ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চলছি বছর চুক্তি হবে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বে-টার্মিনালের চতুর্থ টার্মিনাল হিসেবে গ্যাস ও অয়েল টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এ টার্মিনাল নির্মাণের জন্য একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে বে-টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। বঙ্গোপসাগর উপকূলীয় আউটার রিং রোডের লাগোয়া পতেঙ্গা-হালিশহরের প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে গড়ে উঠবে আগামীর বন্দর খ্যাত এ টার্মিনাল। এ মেগা প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হলে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামের ওপর থেকে অনেকাংশে কমবে চাপ। এটি চালু হলে আগামী ১০০ বছর বন্দর সম্প্রসারণ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বে-টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ নোঙর করতে পারবে। এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকবে রেল, সড়ক, নৌ পথ। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর ব্যবহারের সুবিধা থাকবে। জাহাজ বার্থিংয়ের ক্ষেত্রে নাইট নেভিগেশনসহ ২৪ ঘণ্টা জাহাজ চলাচল করতে পারবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কনটেইনারের ভাড়া প্রতি ইউনিটে ২ হাজার থেকে ১ হাজার মার্কিন ডলারে নেমে আসবে। ফলে জাহাজ ভাড়া কমে যাবে। আমদানি ব্যয় হ্রাস পেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটবে। কমবে বন্দরে জাহাজ জট। বে-টার্মিনালে একসঙ্গে রাখা যাবে ৫০ হাজারের বেশি কনটেইনার; যাতে থাকবে স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটার, এলপিজি, এলএনজি টার্মিনালসহ আধুনিক সব সুযোগসুবিধা।

সর্বশেষ খবর