বুধবার, ১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বিলুপ্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

অভিযুক্ত ৪৫১ সাংবাদিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিলুপ্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ)-এর অধীনে গত পাঁচ বছরে ৪৫১ জন সাংবাদিক অভিযুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিবেদনের জন্য ২৫৫ জন, অন্যান্য কারণে ১৮২ জন; আর ১৪ জনের মামলার কারণ জানা যায়নি। গতকাল সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের পাঁচ বছর : ২০১৮-২০২৩’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। গবেষণা দলের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন। সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর সভপতিত্বে ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইন ও শালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল, এএফপির ব্যুরো চিফ শফিকুল আলম, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান প্রমুখ। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০২৩ সালে সরকার ঘোষণা দেয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি (ডিএসএ) এখন থেকে সাইবার নিরাপত্তা আইন (সিএসএ) দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে দায়ের করা মামলাগুলো অব্যাহত থাকবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি হিসাব অনুযায়ী ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলার সংখ্যা ৭ হাজার ১। প্রতিটি মামলায় গড় আসামি ৩ দশমিক ১২ জন। মোট আসামির সংখ্যা অন্তত ২১ হাজার ৮৬৭। প্রতিটি মামলায় গড়ে ১ দশমিক ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মোট হিসাব দাঁড়ায় কমপক্ষে ৭ হাজার ৫৪২ জন। তারা সবাই আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। সিজিএসের প্রতিবেদন বলছে, অভিযুক্তের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ জনের পেশা শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে রাজনীতিবিদ ৪৯৫, সাংবাদিক ৪৫১, শিক্ষার্থী ১৩৮, ব্যবসায়ী ১০৮, শিক্ষক ৫৯ জন। এর মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন মোট ৫৭২ জন। সেখানে রাজনীতিবিদ ১৪৩, সাংবাদিক ৯৭, শিক্ষার্থী ১০৪, বেসরকারি চাকরিজীবী ৫২, শিক্ষক ৪২ জন। অন্যদিকে অভিযোগকারীর মধ্যে পেশা শনাক্ত করা গেছে ৮৫৯ জনের। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ১৮৯, রাজনীতিবিদ ৩৩৮ জন; যার ২৬৩ জনই আওয়ামী লীগের। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ ও শাস্তিযোগ্য ২২টি ধারার মধ্যে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ২৫ ধারায় ২৬৯টি। এরপর ২৯ ধারায় ২৬৭টি, ৩১ ধারায় ১৬৭টি, ৩৫ ধারায় ১৭৩টি। এ ছাড়া প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো : ডিএসএ’র অধীন অভিযুক্ত ও আটক ব্যক্তিদের জামিন মঞ্জুর করা এবং সাংবাদিক, মানবাধিকার সংস্থা, আইনজীবী ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে ডিএসএ’র অধীন দায়ের করা প্রতিটি মামলার নথি পরীক্ষা, সরকারিভাবে মামলার সংখ্যা, অভিযুক্ত, আটক আসামির সংখ্যা প্রকাশ করা, আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের ক্ষেত্রে পুলিশ আইনি প্রক্রিয়া মানছে কি না পরীক্ষা করা, বিচারপূর্ব বন্দিদের হয়রানি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন তৈরি এবং এ আইনের অধীন যারা বেআইনিভাবে আটক তারা যেন ক্ষতিপূরণ পান সে ব্যবস্থা করা।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর