বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিতর্কের মধ্যে করোনার টিকা প্রত্যাহার অ্যাস্ট্রাজেনেকার

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরীক্ষার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনার টিকা ‘কোভিশিল্ড’ এবং ‘ভ্যাক্সজেভ্রিয়া’র মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের মুখে বিশ্ববাজার থেকে এই টিকা প্রত্যাহার শুরু করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেন ও অন্যান্য দেশেও ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে শুধু বাণিজ্যিক কারণেই এ টিকা তুলে নিচ্ছে বলে গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানিটি। এদিকে বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা যারা নিয়েছেন তাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত সভায় মন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। আমরাও যেহেতু এই টিকা গ্রহণ করেছি, আমাদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে কি না, তা খুঁজে দেখতে হবে। গতকাল রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার দাবি, বিশ্ব বাজারে বর্তমানে এই টিকার চাহিদা কমে গেছে। একই সঙ্গে করোনার মুখে খাওয়ার ওষুধসহ আপডেটেড টিকার প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। বাণিজ্যিক কারণেই তারা বাজার থেকে এই টিকা তুলে নিচ্ছে। এর সঙ্গে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৫ মার্চ টিকা প্রত্যাহারের আবেদন করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, যা ৭ মে কার্যকর হয়।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বাণিজ্যিক কারণে এই টিকা প্রত্যাহারের কথা বললেও তাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা চলছে। গত ফেব্রুয়ারিতে আদালতের কাছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করেছে, এই টিকা ব্যবহারের কারণে বিরল ক্ষেত্রে টিটিএস (থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম) হতে পারে। টিটিএসের ফলে রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। যদিও সংস্থাটি জানায়, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার হার অত্যন্ত কম। সার্বিকভাবে এই টিকা নিরাপদ এবং কার্যকর।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করোনার যে টিকা উৎপাদন করে, তার ব্র্যান্ড নাম ভ্যাক্সজেভ্রিয়া। এরপর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট সেই টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স পায়। তারা কোভিশিল্ড নামে সেই টিকা বাজারজাত করে। ভারতের করুনিয়া নামের এক তরুণী কোভিশিল্ড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মারা গেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা বেণুগোপাল গোবিন্দ। ইকোনমিক টাইমসকে তিনি বলেন, সেরাম ইনস্টিটিউট, ভারত সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সবাই তার মেয়েসহ আরও অনেক মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিচারের দাবিতে এ রকম আটটি পরিবার একত্র হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেণুগোপাল গোবিন্দ।

সর্বশেষ খবর