শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্কুলের বাইরে ৪০.৭২ শতাংশ শিশু-কিশোর

একগুচ্ছ সুপারিশ গণসাক্ষরতা কেন্দ্রের

নিজস্ব প্রতিবেদক

গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বলা হয়েছে, দেশের ৪০ দশমিক ৭২ শতাংশ শিশু-কিশোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে রয়ে গেছে। গত বছর প্রায় ৪১ শতাংশ শিশু-কিশোর-যুব শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে ছিল।

গতকাল বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ : সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সভায় আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের কার্যক্রম ব্যবস্থাপক আবদুর রউফ। সভা সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী।

আলোচনাপত্রে বিবিএস-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার ইতোমধ্যে ১০ লাখ ঝরে পড়া শিশুকে শিক্ষায় ‘দ্বিতীয় সুযোগ’ কার্যক্রমের আওতায় ‘আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন’ প্রকল্প উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু প্রকল্পভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা থাকে না বলে এ শিক্ষা টেকসই হয় না এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থীর তেমন কোনো কাজে আসে না। সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত গণসাক্ষরতা অভিযানের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়। রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকে পড়ালেখা শিখছে। কিন্তু তাদের কোনো বিদ্যালয় ভর্তি নেবে না। বয়স না থাকলে কোথাও তারা ভর্তি হতে পারে না। অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, দেশের সর্বত্র বাজেট ব্যবস্থাপনায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। দুর্নীতি, লুটপাটের প্রবণতা রয়েছে, রয়েছে দেশপ্রেমের অভাব।

নেপাল, শ্রীলঙ্কাতেও এমন দেশপ্রেমের অভাব দেখিনি। কোনো দেশে কেউ ভাবে না যে, কানাডায় বাড়ি করে শেষ জীবন অতিবাহিত করব। একমাত্র আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এটি হয়। এসব সমস্যার সমাধান নির্ভর করে সরকারের সদিচ্ছার ওপর। তিনি বলেন, শিক্ষার জন্য অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়। কারণ প্রকল্পের পেছনে অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকে। প্রকল্পের দামি দামি গাড়ি, বিদেশভ্রমণের টাকা বাঁচিয়ে যদি শিক্ষার জন্য কাজে লাগানো যেত তবে এসব সমস্যা থাকত না। সুপারিশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে শিক্ষার বাইরে থাকা শিশু-কিশোরদের এলাকা চিহ্নিত করে পকেট এরিয়া হিসেবে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতি শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে ৫০০ টাকা স্টাইপেন্ড দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়। সভায় বক্তারা শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটে ২০ শতাংশ বরাদ্দ, বিদ্যালয় বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দ করা, উপবৃত্তির সংখ্যা এবং পরিমাণ বাড়ানো, মিড ডে মিল সর্বজনীনভাবে চালু করার দাবি জানান। সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূরজাহান খাতুন, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ এবং চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়।

সর্বশেষ খবর