দেশে প্রথমবারের মতো প্রকাশ করা হয়েছে পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই)। এ সূচক অনুযায়ী চলমান ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির চাপ ও অনিশ্চয়তার মুখেও স্থিতিশীলতা দেখিয়ে সম্প্রসারণের পথে আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। শিল্পোদ্যোক্তাদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই বা মেট্রো চেম্বার) ও গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এ সূচক প্রকাশ করেছে। গতকাল রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই কার্যালয়ে এ সূচক প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার ম্যাট ক্যানেল। স্বাগত বক্তব্য দেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান। সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্ট (এসআইপিএমএম) এবং যুক্তরাজ্যের ইউকে ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এ সূচক প্রণয়নে সহায়তা করেছে। অনুষ্ঠানে পিএমআইয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এসআইপিএমএম এর নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন পোহ ও পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও পরিষেবা এ ৪ খাতের ৫০০টির বেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হবে। শুরুতে প্রতি প্রান্তিকে এ সূচক প্রকাশ করা হবে, পরে তা প্রতি মাসে প্রকাশিত হবে। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পণ্যের ক্রয়াদেশ, মজুত, উৎপাদন, সরবরাহ পরিস্থিতি ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হবে। পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হবে। আগের মাসের তুলনায় স্কোর ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ আর তার নিচে হলে সংকোচন বোঝাবে। স্কোর ৫০ হলে ধরে নিতে হবে, ওই প্রান্তিকে কোনো পরিবর্তন, অর্থাৎ অর্থনীতির সংকোচন বা প্রসারণ হয়নি। প্রকাশিত সূচকে উল্লেখ করা হয় যে, এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআই কমেছে। এপ্রিল মাসে এ সূচক ২ দশমিক ১ শতাংশ কমে ৬২ দশমিক ২-এ নেমে এসেছে। মার্চ মাসে এ সূচকের মান ছিল ৬৪ দশমিক ৩। সূচকটি আগের মাসের তুলনায় সামান্য কমলেও অর্থনীতি নতুন প্রান্তিকে সম্প্রসারণের পথে আছে। উৎপাদন ও কৃষি উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, তবে পরিষেবা ও নির্মাণ খাতে ধীর প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সেবা ও নির্মাণ খাতে ধীরগতির কারণে এপ্রিলে সূচক আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ১ পয়েন্ট কমেছে।
