শিরোনাম
রবিবার, ১২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মাটি খুঁড়তেই ২০০ বছরের পুরনো নৌকা!

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

মাটি খুঁড়তেই ২০০ বছরের পুরনো নৌকা!

মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো ২০০ বছরের পুরনো পালতোলা নৌকা। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ মিটার ও প্রস্থ ২০ মিটার। আশ্চর্যজনক এমন ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার এসবিকে ইউনিয়নের বজরাপুর গ্রামের কাগমারির ইটেঘাট বাঁওড় পাড়ে। এ নৌকা দেখার জন্য প্রতিদিন আশপাশ এলাকার উৎসুক জনতা ভিড় করছেন। স্থানীয়দের দাবি, এখানে খুঁড়লে আরও নৌকার সন্ধান পাওয়া যাবে।

জানা গেছে, বজরাপুর গ্রামের নজের আলীর ছেলে মনছের আলী তিন দিন আগে বজরাপুর বাঁওড় থেকে ধানখেতে পানি দেওয়ার জন্য সেচখাল খনন করছিলেন। সে সময় খাল খুঁড়তে খুঁড়তে তার কোদালের মাথায় নৌকার কিছু অংশ উঠে আসে। এ খবর প্রচার হয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ মিলে নৌকার সন্ধানে খননকাজ শুরু করতে থাকেন। তিন দিন ধরে খননের পর বৃহস্পতিবার পুরো নৌকার আকৃতি খুঁজে পান।

খননকাজে যুক্ত বজরাপুর গ্রামের ইসমাইল মল্লিক জানান, নৌকাটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা ও চওড়া ২০ ফুট হবে। নৌকার বেশির ভাগ অংশ বাঁওড়ের মধ্যে ঢুকে আছে। নৌকাটি শাল কাঠ দিয়ে তৈরি হবে হয়তো।

বজরাপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, নৌকাটি বহুকালের পুরনো। কাঠগুলো পচে নষ্ট হয়ে গেছে। লম্বা কাঠগুলো কিছুটা ভালো আছে। মাটির চার ফুট নিচে নৌকাটি পাওয়া গেছে। তিনি আরও জানান, নৌকাটি দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।

তিনি জানান, খ্রিষ্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে ইউরোপীয় এবং স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা এ ধরনের নৌকা ব্যবহার করতেন। এ নৌকার দুই-তৃতীয়াংশ জায়গাজুড়ে থাকত ঘুমানো বা বিশ্রামের কক্ষ। ঘরবাড়ির মতো এসব কক্ষে থাকত জানালা। সাধারণভাবে যাত্রীর ধারণক্ষমতা থাকত ১০ থেকে ১২ জন। এর ভিতরে মাঝি থাকত চারজন। রান্না ও অন্যান্য কাজের জন্য থাকত দুজন।  স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য পূর্ণিমা রানি জানান, নৌকার প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘বজরা’। এই গ্রামের নামও বজরাপুর। হয়তো কোনো একসময় এই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সম্বল ছিল নৌকা। সেই নাম অনুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে ‘বজরাপুর’। তিনি আরও জানান, খবর শুনে তিনিও বজরাপুরের বাঁওড় এলাকার হালদারপাড়ায় গিয়ে বৃহৎ নৌকাটি দেখে এসেছেন। তিনি এটি সংরক্ষণের দাবিও করেন।  এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাস জানান, পুরনো নৌকা পাওয়ার বিষয়টি তিনি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরকে জানাবেন।

তবে স্থানীয় এসবিকে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আরিফান হাসান চৌধুরী নুথান জানান, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের এক কর্মকর্তা আমাকে ফোন করেছিলেন। তারা যদি এটি উদ্ধার করে সংরক্ষণ করতে চান তাহলে আমি সহযোগিতা করব।

সর্বশেষ খবর