রবিবার, ১২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বৃষ্টিতে ডুবেছে সড়ক, ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাভার প্রতিনিধি

বৃষ্টিতে ডুবেছে সড়ক, ভোগান্তি

অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে সড়ক। ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। রাজধানীর সড়কে জলাবদ্ধতা (ওপরে)। সাভারেও জমেছে পানি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জলাবদ্ধতা দূর করতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কারে ২২ কোটি টাকার কাজ মাত্র শেষ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে গতকালের বৃষ্টিতে সেক্টরের কয়েকটি সড়কে হাঁটুপানি জমে যায়। একই সঙ্গে বাসাবাড়ির ভিতর ঢুকে যায় পানি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সেক্টরের বাসিন্দারা। জলাবদ্ধতা দূর করতে ২২ কোটি টাকা কোথায় খরচ হলো সেই প্রশ্ন এখন সেক্টরবাসীর। অথচ এ সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়কেই বসবাস করেন ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

শুধু উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরে নয়, রাজধানীর দক্ষিণখান, উত্তরখান, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমউদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায়, ইসিবি, নূরেরচালা, বাড্ডাসহ বিভিন্ন স্থানে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। কোথাও কোথাও দুপুরের পরও পানি জমে ছিল। এ ছাড়া মিরপুর ১৪, ১২, ১১, ১০ ও ২ নম্বর এলাকায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। একই সঙ্গে কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, কালশী রোডে দেখা গেছে জলাবদ্ধতা। পল্লবী থানা এলাকায় কালশী রোডে পানি জমেছে, কোথাও জমেছে হাঁটুপানি আবার কোথাও একটু বেশি। বৃষ্টিতে বেশির ভাগ অফিসগামী মানুষই ভোগান্তিতে পড়েন। কালশী রোডের ২২ তলা গার্মেন্টসের সামনে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় অনেক নারী-পুরুষকে ছাতা মাথায় এই জলাবদ্ধতা পার হতে দেখা গেছে। হাজারীবাগের জাফরাবাদ এলাকার বাসিন্দা ইলা ফারজান বলেন, সকাল থেকে টানা এক-দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়ক ও গলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে অফিসগামী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।  রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি ধানমন্ডি থেকে কারওয়ান বাজার আসার পথে অনেক স্থানে সড়কে পানি জমে থাকতে দেখেছেন। তিনি বলেন, বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর ১ ঘণ্টারও বেশি সময় একটি দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। মোহাম্মদ বাবু মিয়া নামে মিরপুরের এক বাসিন্দা বলেন, এ এলাকায় তেমন বড় কোনো সমস্যা না থাকলেও বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা একটা বড় সমস্যা। ভাঙা সড়ক দিয়ে চলা সম্ভব হলেও জলাবদ্ধতার সময় ড্রেনের ময়লা আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে যাওয়ায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা বাসা থেকেই বের হওয়া যায় না। অলিগলিতে ড্রেনের কাজ চলমান থাকলেও কোনো সুফল এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ঢাকায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার (আজ) বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমে এলেও আট বিভাগেই কম-বেশি বৃষ্টি হতে পারে। তবে দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আশুলিয়ার সড়কে হাঁটুপানি বেঁধেছে যানজটও : হঠাৎ স্বস্তির বৃষ্টিতে ডুবে গেছে সাভারের আশুলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক। গত শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হওয়া বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে রয়েছে সড়কটির বিভিন্ন অংশ। উত্তর-পশ্চিমের মানুষের রাজধানীতে প্রবেশ ও বাইরের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পথ এটি। গতকাল বিকালে সড়কটিতে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের একপাশে বিশাল আকারের ড্রেন পানিতে উপচে গেছে। সড়কের জামগড়া থেকে শিমুলতলা ও ইউনিক এলাকায় হাঁটুপানি। এতে পরিবহনগুলো ধীরগতিতে যাচ্ছে। আবার কোনো সময় দীর্ঘ যানজটেরও সৃষ্টি হয়ে যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সড়কের দুই পাশে থাকা দোকান ও বসতবাড়িতেও পানি উঠেছে। নরসিংহপুর থেকে জামগড়া রাস্তার রিকশাচালক ফজলে রাব্বী বলেন, এটা আর নতুন কি। সকালে একটু বৃষ্টিতেই এই অবস্থা হয়েছে। এক মাস পর ঈদ। আল্লাহ ভালো জানেন তখন কী হবে।  গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, আশুলিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে। শ্রমিকরা ভোগান্তির শিকার হন। সড়কে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমায় সময়মতো তারা কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে পারেন না। বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ওই রাস্তাটায় পানি উঠে যাওয়ায় অবস্থা খুব খারাপ। ইউনিক, জামগড়া ও শিমুলতলা এলাকায় সড়কে পানি জমে আছে। এ কারণে সড়কে যানজট লেগেই আছে।’

সর্বশেষ খবর