সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মজুতদারিতে বাড়ছে আলুর দাম

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

মজুতদারিতে বাড়ছে আলুর দাম

কৃষি বিপণন অধিদফতরের গতকালের রিপোর্ট অনুযায়ী দেশি সাদা আলুর পাইকারি পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্য ছিল ২৩ টাকা ৩০ পয়সা; অথচ পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৪৩ টাকা দরে। যৌক্তিক মূল্যের চেয়ে কেজিতে শুধু পাইকারি বাজারেই ২০ টাকা বেশি রাখা হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা পর্যায়ে। ভরা মৌসুমেও প্রতি কেজি আলুর জন্য ভোক্তাকে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা গুনতে হচ্ছে।

শুধু পাইকারি নয়, কৃষক পর্যায়ে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ দামে এ বছর আলু বিক্রি হচ্ছে বলে একটি ডিসি রিপোর্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এসেছে। রংপুর থেকে পাঠানো ওই ডিসি রিপোর্টে দাম বাড়ার দুটো কারণ তুলে ধরা হয়েছে। ১. মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় আলু কিনে মজুত করছেন। ২. আলু কিনে হিমাগারে মজুত করায় সংরক্ষণ ব্যয় বেশি পড়ছে। এ পরিস্থিতিতে পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে সামনে আলুর দাম খুচরা পর্যায়ে ৫০ টাকা কেজি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ডিসি রিপোর্টে।

রংপুর জেলা প্রশাসন জানায়, রংপুর বিভাগে ৪০টি হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৪ লাখ ২২ হাজার ৫৩৮ মেট্রিক টন। ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত হিমাগারগুলোতে খাবার ও বীজ আলু মিলিয়ে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৩ মেট্রিক  টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। বস্তার হিসাবে ৫২ লাখ ৩৬৮ বস্তা। গত বছর প্রতি বস্তা আলু সংরক্ষণে ৩০০ টাকা হিমাগার ভাড়া থাকলেও এবার তা বাড়িয়ে ৩৮৫ টাকা করা হয়েছে। প্রতি বস্তায় শুধু সংরক্ষণ চার্জ বাড়ছে ৮৫ টাকা। এটি আলুর মূল্য বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে জেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, আলুর দাম বাড়ার পেছনে বেশ কিছু বিষয় কাজ করছে। প্রথম পর্যায়ে কৃষক কিছুদিন আলু ধরে রাখায় ভরা মৌসুমেও সবজিটির দাম বেশি পড়ছে। তবে এখন আর কৃষকের হাতে আলু বেশি নেই। হিমাগার থেকে আলু বেরোচ্ছে। ফলে খুব দ্রুত দাম কমে যাবে। আলু নিয়ে সরকার পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তিন, চার মাস পর দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ঢাকা থেকে খুব বেশি করণীয় নেই। আলুর মজুতদারি ও অতিরিক্ত মুনাফা ঠেকাতে জেলা প্রশাসকদের আগে থেকেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারা যদি স্থানীয় পর্যায়ে সঠিকভাবে বাজার মনিটরিংয়ের পাশাপাশি হিমাগার থেকে আলু ছাড়ার বিষয়টি মনিটরিং করেন তবে পাইকারি বাজারে সরবরাহ বাড়বে। সরবরাহ বাড়লেই দাম কমে আসবে।

সর্বশেষ খবর