সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেই শিশুটি কেমন আছে

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

সেই শিশুটি কেমন আছে

সড়ক দুর্ঘটনায় মা জায়েদা মারা গেলেও বেঁচে আছে দেড় বছরের শিশুপুত্র জায়েদ। শিশুটির একমাত্র অবলম্বন মা সারা জীবনের জন্য তাকে ছেড়ে চলে গেছে- সেটি বোঝার ক্ষমতা নেই তার। আধো আধো বুলিতে মা মা বলে কেঁদে চলেছে শিশু জায়েদ। পাশে থাকা চিকিৎসক-নার্স কেউই শিশুটির কান্না থামাতে পারছেন না। এমন চিত্র ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে। শনিবার রাতে নিহত নারী ও তার শিশুপুত্রের পরিচয় মিললে গতকাল দুপুরে হাসপাতালে ছুটে আসেন ওই নিহত নারীর ভাই।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন জায়েদা (৩২) ও তার শিশুপুত্র জায়েদ। ভোররাতে কে বা কারা তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে জায়েদার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে শিশু জায়েদ। ঘটনার পর থেকে তাদের পরিচয় মিলছিল না। স্বজনের খোঁজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুটির ছবি পোস্ট করেন অনেকে। সেই ছবিতে দেখা গেছে, স্ট্রেচারে নারীর নিথর দেহ। মাথায় ব্যান্ডেজ। তার বুকের ওপর শুয়ে কাঁদছে ছোট্ট শিশু। তার মাথায়ও ব্যান্ডেজ। পাশে থাকা চিকিৎসক-নার্স কেউই শিশুটির কান্না থামাতে পারছেন না। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনের এ দৃশ্য দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি কেউ। শিশুটির কান্নার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে শনিবার রাতে স্বজনের খোঁজ মেলে। জায়েদা সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার কুশিউড়া গ্রামের রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। ছেলে জায়েদকে নিয়ে তিনি ময়মনসিংহের ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় থাকতেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য তারিকুল ইসলাম আহত শিশু জাহিদ ও তার মাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করেছিলেন। তারিকুল বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবং তার মাকে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জায়েদা মারা যান। লাশ হাসপাতালের ঘরে রাখা হয়েছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন বেদেনা আক্তার জানান, ওই নারী যখন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল তখনও শিশুটি তাদের মায়ের বুকের দুধ পান করেছে। এ দৃশ্য দেখে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।

জায়েদের চিকিৎসা চলছে : জায়েদার মৃত্যুর ঘটনায় ভরাডোবা হাইওয়ে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে অজ্ঞাত গাড়ির বিরুদ্ধে গতকাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। পুলিশ জায়েদার ময়নাতদন্ত শেষে ভাই রবিন মিয়ার কাছে হন্তান্তর করেছে বলে নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি থানার এসআই আবুল কাশেম। তবে লাশ হন্তান্তর করলেও শিশু জায়েদকে হস্তান্তর করা হয়নি।

সর্বশেষ খবর