সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

নিয়োগে ডিজিটাল স্পাই জালিয়াতি, গ্রেফতার ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগে কোনো না কোনো কেন্দ্র ম্যানেজ করত একটি চক্র। ওই কেন্দ্র থেকে প্রশ্নের ফটোকপি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হতো চক্রের সদস্যদের কাছে। ৫ মিনিটের মধ্যে সেই প্রশ্নের সমাধান করে ফেলত প্রশ্ন সমাধান টিম। এরপর তারা উত্তরগুলো পরীক্ষার্থীদের বলতে থাকত। নারী পরীক্ষার্থীদের অন্তর্বাস এবং ছেলেদের গেঞ্জির মধ্যে লুকানো থাকত ডিজিটাল ডিভাইস। একই সঙ্গে পরীক্ষার্থীর কানে রাখা হতো ক্ষুদ্রাকৃতির বল। পকেটের মধ্যে থাকত একটা রাউটার। বাইরে থেকে যখনই টেলিফোন করত সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার্থী শুনতে পারত এবং ১০ মিনিটের মধ্যে প্রশ্নের সমাধান করে পরীক্ষা শেষ করত।

সম্প্রতি এমন এক চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত সাতজন হলেন- জুয়েল খান, রাসেল, মাহমুদুল হাসান শাকিল, আবদুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, আজহারুল ইসলাম এবং মাসুম হাওলাদার। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা ১০টি ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস, ৭টি মোবাইল ফোন, ১০টি সিমকার্ড এবং একটি পকেট রাউটার উদ্ধার করা হয়। ঢাকার শাহজাহানপুর, শেরেবাংলানগর ও ধামরাই এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর জানিয়ে দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত এ চক্রটি। তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে চুক্তি করত। চাকরিভেদে এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দিতে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষার জন্য ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিত। তিনি আরও বলেন, চক্রের মূল হোতা জুয়েল খান। সে ডিভাইস সংগ্রহ ও সরবরাহ, প্রশ্নপত্র সংগ্রহ, সমাধান টিমের সদস্য সংগ্রহ ও চক্রের অন্যদের সঙ্গে সমন্বয় করত। রাসেল, মাহমুদুল হাসান শাকিল ও আবদুর রহমান পরীক্ষার্থী সংগ্রহ এবং পরীক্ষার্থীদের কাছে ডিজিটাল ইলেকট্রনিক স্পাই ডিভাইস পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ডিভাইসটি কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তার বিস্তারিত ব্যবহার শিখিয়ে দিত। আরিফুল ইসলাম কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সুবিধামতো সময়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পৌঁছে দিত। সমাধান টিম অতি দ্রুত সেই প্রশ্নের সমাধান করে নির্ধারিত পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দিত।

সর্বশেষ খবর