বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

এক মাসে মাত্র দুই দিন মিলেছে সহনশীল বাতাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতি বছর শীতকালে ভয়াবহ বায়ুদূষণের কবলে পড়ে ঢাকা। এপ্রিল-মে মাসে কালবৈশাখির সঙ্গে বৃষ্টি হওয়ায় দূষণ অনেকটা কমে আসে। তবে এ বছর এপ্রিল-মে মাসেও বায়ুদূষণে বিশ্বের মধ্যে শীর্ষ শহরের তকমা ধরে রেখেছে ঢাকা। গতকাল বেলা ৩টায় ঢাকা ছিল ১১৮টি বড় শহরের মধ্যে তৃতীয় দূষিত শহর। প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও মুম্বাই। সাড়ে ৩টায় মুম্বাইকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেয় ঢাকা। ৪টায় ঢাকা ছিল বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর। এরপর দূষণ আবার কমতে থাকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বায়ুদূষণের জন্য দায়ী রাস্তাঘাটের ধুলা, ইটভাটা, নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ না করা, উন্মুক্ত ট্রাকে নির্মাণসামগ্রী পরিবহন, গাড়ির কালো ধোঁয়া- সবই রয়ে গেছে। এ নিয়ে বছরের পর বছর আলোচনা-সমালোচনা হলেও বক্তৃতা করা ছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ কেউ নেয়নি। বর্ষা হলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে দূষিত পদার্থ ভূ-পৃষ্ঠে পড়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে দূষণ কমে যায়। এ বছর এপ্রিলে দাবদাহের পাশাপাশি বিগত ৪৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হয়েছে। মে মাসেও বৃষ্টির দেখা তেমন নেই। এ কারণে এখনো ঢাকার বাতাস অনেক বেশি দূষিত। বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা আইকিউএয়ারের লাইভ ডাটায় দেখা যায়, গতকাল বিকাল ৪টায় বায়ুমান সূচকে ঢাকার স্কোর ছিল ১৫৩, যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ক্ষতিকর অতি সূক্ষ্ম বস্তুকণা ছিল (পিএম-২.৫) ৫৯ মাউক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার (বার্ষিক গড়) চেয়ে প্রায় ১২ গুণ বেশি। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাবাসী সহনশীল বাতাস পেয়েছে মাত্র চার ঘণ্টা। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকাবাসী কোনো সহনশীল বাতাস পায়নি। ১৩ মে সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঢাকার বাতাস ছিল অতিমাত্রায় দূষিত। সকাল ৮টায় প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম-২.৫ ছিল ১৪১.৮ মাইক্রোগ্রাম, যা নিরাপদ সীমার চেয়ে ২৮ গুণ বেশি। এদিকে গত এক মাসের মধ্যে শুধু ১ ও ৪ মে সহনশীল মাত্রায় দূষিত ছিল ঢাকার বাতাস। বাকি দিনগুলোর কখনো ছিল অস্বাস্থ্যকর, কখনো ছিল সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১ ও ৪ মে দূষণ কমার কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, ৪ মে শনিবার সরকারি ছুটির দিন এবং ৩ মে রাতে ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়। অপরদিকে পয়লা মে বা তার আগের রাতে বৃষ্টিপাত না হলেও মে দিবসের ছুটিতে বন্ধ ছিল সব কলকারখানা ও নির্মাণকাজ। রাস্তায় যানবাহন ছিল কম। ফলে পুরোপুরি নির্মল না হলেও সহনশীল বাতাস পায় ঢাকাবাসী। ওই দিন ঢাকায় প্রতি ঘনমিটার বাতাসে দূষণ উপাদান পিএম-২.৫ ছিল ৩২.৯ মাইক্রোগ্রাম, যা সহনশীল হিসেবে বিবেচিত। যদিও ভালো বাতাসের জন্য পিএম-২.৫ থাকতে হয় ১০ মাইক্রোগ্রামের নিচে এবং বার্ষিক গড় থাকতে হয় ৫ মাইক্রোগ্রামের কম।

সর্বশেষ খবর