শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

কাঁসাশিল্পে জড়িতরা কেমন আছেন

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কাঁসাশিল্পে জড়িতরা কেমন আছেন

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী কাঁসার তৈজসপত্র। আগে কাঁসার সামগ্রী বগুড়ার ঘরে ঘরে নিত্য ব্যবহৃত ও সামগ্রী হিসেবে দেখা যেত। বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়া লাগার সঙ্গে সঙ্গে এসবের ব্যবহারে ভাটা পড়েছে। সেই সঙ্গে দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধ্যের বাইরে চলে গেছে কাঁসার জিনিসপত্র। এক বছর আগে যার মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১ হাজার ৬০০ টাকা। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৪০০ টাকা। নিম্ন আয়ের মানুষের কেনার মতো সাধ্য নেই। বগুড়ায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে কমবেশি কাঁসার জিনিসপত্র দেখা যায়। তবে আগের দিনে যেভাবে বাড়িতে সাজিয়ে রাখত সেটা আর দেখা যায় না। তারা এখন প্লাস্টিক, সিরামিক, মেলামাইনের জিনিসপত্র ব্যবহার করছে। যার ফলে ভাটা পড়েছে অভিজাতের প্রতীক কাঁসাশিল্পে। বগুড়া শহরের শিববাটীতে এক সময় কাঁসাশিল্পের কারখানা গড়ে উঠেছিল। এখান থেকে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়া হতো কাঁসার তৈরি থালা, বাটি, গ্লাস, জগ ও রান্নার হাঁড়িপাতিলসহ অন্যান্য তৈজসপত্র। নানা সমস্যার কারণে সেটি অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের সঙ্গে জড়িত শিল্পী ও ব্যবসায়ীরা আজ অভাব-অনটনে দিন কাটাচ্ছে। বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে আজ কাঁসাশিল্পে জড়িতরা বিভিন্ন পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছে। বগুড়া শহরের রাজাবাজারে নিউ গন্ধেশ্বরী ঘি স্টোরের স্বত্বাধিকারী শ্রী অজয় কুমার কুন্ডু চৌধুরী জানান, ব্রিটিশ আমল থেকে তাদের তিন পুরুষ কাঁসাশিল্পের সঙ্গে জড়িত। তারা নোটা, ঘটি, হাঁড়িপাতিল, থালা, কলস, গ্লাস, বদনি ও বিভিন্ন শো-পিস, দেবদেবী ও জীবজন্তুর প্রতিকৃতি জিনিসপত্র তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন। সে সময় প্রচুর চাহিদা ছিল। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্লাস্টিক, লোহা ও স্টিলের তৈরি জিনিসপত্র তৈরি হওয়ায় সেটিও অনেক আগে বন্ধ হয়ে গেছে। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখন পর্যন্ত ধরে রেখেছেন।

 এখন ঢাকা থেকে কাঁসার জিনিসপত্র কিনে এনে বিক্রি করছেন। আগের চেয়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই কিনতে হিমিশিম খাচ্ছে। ফলে বিক্রিও অনেক গুণ কমে গেছে।

সর্বশেষ খবর