শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাজেট ২০২৪ - ২০২৫

বাজেটে নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলন থাকতে হবে

ড. জাহিদ হোসেন

মানিক মুনতাসির

বাজেটে নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলন থাকতে হবে

চলমান অর্থনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেটে সরকারের নির্বাচনি ইশতেহারের প্রতিফলন থাকতে হবে। বাজেটে আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোকে সামনে আনতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন, এই তিনটি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আসন্ন জাতীয় বাজেট কেমন হওয়া উচিত, এ বিষয়ে গত সোমবার বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশের এ বরেণ্য অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন। ড. জাহিদ হোসেন বলেন, টানা চতুর্থ দফা ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই  বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম বাজেট। এ ছাড়া এবারের প্রেক্ষাপটটাও ভিন্ন। বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা, যেমন- অর্থমন্ত্রী,  অর্থ প্রতিমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে অন্য কর্মকর্তারাও নতুন। এর সঙ্গে রয়েছে বৈশ্বিক বৈরিতা। তিনি যোগ করেন, এর পাশাপাশি আমাদের দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিও কঠিন এক সংকটকাল অতিক্রম করছে। আমরা যদি বলি, সামষ্টিক অর্থনীতি ঠিক আছে, তবে সেটা ভুল বলা হবে। কেননা, সেটা তো বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। পরিস্থিতি যদি ঠিকই থাকে তাহলে ডলার বাজারের এমন পরিস্থিতি কেন? রাজস্ব আদায় কেন বাড়ে না? ব্যাংকে কেন টাকা নেই? রিজার্ভের পতন কেন ঠেকানো যাচ্ছে না? এসব বিষয়কে বাজেটের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অর্থাৎ এসব সংকট সমাধানের পথ দেখাতে হবে বাজেটে। আগামী বাজেটে অগ্রাধিকারের বিষয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, প্রথমত, ডলার সংকটের জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সামগ্রিক অর্থনীতির কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। এবং সেগুলো লোক দেখানো কিংবা দায়সারা নয়। হতে হবে কার্যকর সংস্কার। দ্বিতীয়ত, আর্থিক খাতের দুর্দশা কাটাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগকারী, সঞ্চয়কারী কারোরই আস্থা ধরে রাখা যাবে না। এ ছাড়া আমরা উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করতে যাচ্ছি, সেটার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার যেসব নির্দেশনা থাকবে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর রপ্তানি ও বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক নতুন নতুন বাস্তবতা আমাদের সামনে চলে আসবে। সেগুলো মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে এই বাজেটেও। তৃতীয়ত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের দুর্দশা কাটাতে হবে। এখানে কোনো রকম টেকসই পরিকল্পনা বা প্রকল্প নেই। যা নেওয়া হয়েছে এর বেশির ভাগই তাৎক্ষণিক বিপদ সামলানোর উদ্যোগ। ফলে আমাদের একটা টেকসই জ্বালানি খাত গড়ে তুলতে হবে। আর মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা চরম ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। তাদের জন্য আলাদা কিছু করতে হবে। তাদের দেশের অর্থনীতির মূল স্রোতের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। এজন্য ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পসহায়ক পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। আর এই পরিকল্পনা কার্যকর বাস্তবায়ন করতে হবে আগামী বাজেট থেকেই।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর