শিরোনাম
রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভারতে নির্বাচনে আলোচনায় প্ল্যান বি

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩৭৯টির নির্বাচন হয়ে গেছে। এসব আসনের জন্য চার দফা ভোট হয়েছে। পঞ্চম দফা ভোট হবে কাল সোমবার ২০ মে; ষষ্ঠ দফা ২৬ মে এবং সপ্তম ও শেষ দফার ভোট ১ গণনা আগামী ৪ জুন। বিপুলসংখ্যক আসনে জিতে বিজেপি আবারও ক্ষমতায় আসার বিষয়ে খুবই আশাবাদী। তাই তারা ‘প্ল্যান বি’ বানানোর কোনো প্রয়োজনই বোধ করছে না। তবে কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিরোধী দলগুলো বলছে, বিজেপি এবার ২ শতাধিক আসনের লক্ষ্যমাত্রায়ও পৌঁছাতে পারবে না। লোকসভা নির্বাচনে ৪০০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট’ (এনডিএ)। এর মধ্যে বিজেপির একার লক্ষ্যমাত্রা ৩৭০ আসনে জয়। নির্বাচনে তাদের স্লোগান ‘ইসবার ৪০০ পার।’ সেই লক্ষ্যেই বিজেপি তার কৌশল ঠিক করেছে। বিজেপির দাবি, ২৭০ আসন নিয়ে ইতোমধ্যে মোদি সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। এবার ৪০০ আসনে জেতার লক্ষ্যে লড়াই শুরু হচ্ছে।  গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, যে ৩৭৯ আসনে ভোট হয়েছে তাতে ২০০ আসন বিজেপি পেয়ে গেছে। মানে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় মোদিজি আবার সরকার গঠন করবেন। এখন বিজেপির যে লড়াই সেটা ৪০০ আসনে জেতার লক্ষ্যে লড়াই।

 

সরকার গঠনের জন্য কমপক্ষে ২৭২ আসন দরকার। ২৭২-কে বলা হয় ম্যাজিক ফিগার। বিজেপি ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে না পারলে সেক্ষেত্রে কি দলটির কাছে ‘প্ল্যান-বি’ অর্থাৎ বিকল্প ভাবনা প্রস্তুত আছে? সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে অমিত শাহকে বলা হয়, রাজনৈতিক চাণক্যদের সব সময় ‘প্ল্যান-বি’ প্রস্তুত থাকে। আপনারও কি এরকম কোনো ‘প্ল্যান-বি’ আছে? উত্তরে অমিত শাহ বলেন ‘প্ল্যান-বি তখনই প্রয়োজন হয়, যখন প্ল্যান-এ সফল করার ক্ষেত্রে সম্ভাবনা ৬০ শতাংশের কম থাকে।’ স্বাভাবিকভাবেই সঞ্চালকের তরফ থেকে প্রশ্ন আসে তৃতীয়বার এর জন্য ক্ষমতায় আসার ক্ষেত্রে বিজেপির সম্ভাবনা কতটা? কারণ শেষবার ২০১৯ সালের নির্বাচনে এনডিএ ৩৫৩ আসনে জয় পেয়েছিল। এর মধ্যে বিজেপি একাই জয় পেয়েছিল ৩০৩ আসনে। এর উত্তরে শাহ জানান, ‘আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি, ১০০ শতাংশ আশাবাদী যে প্রধানমন্ত্রী বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের ক্ষমতায় আসছেন।’  অমিত শাহ বলেন, ‘গোটা দেশের মানুষ চাইছে ভারত সুরক্ষিত হোক, সমৃদ্ধশালী হোক, এই দেশের সম্মান বাড়ুক, এই দেশ আত্মনির্ভর হোক। এই দেশ ‘উন্নত ভারত’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করুক। দেশের প্রতিটি মানুষ- গরিব হোক বা বিত্তবান- তারা প্রত্যেকেই বিশ্বাস করেন যে গত ১০ বছরে গোটা বিশ্বে ভারতের সম্মান বেড়েছে।’

দিল্লিতে মোদির বক্তৃতা শুনলেন ১৩ দেশের কূটনীতিকরা : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনি বক্তৃতা শুনলেন বাংলাদেশ, ভুটান, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ ১৩টি দেশের কূটনীতিকরা। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের লোকসভার নির্বাচন প্রক্রিয়া, নিজেদের দলের নির্বাচনি প্রচারণা পর্যবেক্ষণের জন্য দিল্লিতে অবস্থিত ১৩টি দেশের বিদেশি মিশনের রাষ্ট্রদূতসহ শীর্ষ কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেই আমন্ত্রণ পেয়েই শনিবার নর্থইস্ট দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি নির্বাচনি প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, মরিশাস, নেপাল, রাশিয়া, সিসিলি, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের প্রায় ২৫ জন শীর্ষ কূটনীতিক। সামনে থেকে জনগণের উৎসাহ প্রত্যক্ষ করেন মিশনের কর্মকর্তারা। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির পররাষ্ট্রবিষয়ক দফতরের প্রধান বিজয় চৌথাইওয়ালে জানান এটি হচ্ছে ‘বিজেপিকে জানুন’ কর্মসূচির একটি অংশ।

দলের সভাপতি জেপি নাড্ডার নেতৃত্বে শাসক দল কীভাবে তার নির্বাচনি প্রচারণা করছে, সেটাই পর্যবেক্ষক দলের সামনে তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

বিদেশি কূটনীতিকদের সামনেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিল্লির শাস্ত্রী পার্কে ওই নির্বাচনি প্রচারণা থেকে বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’কে নিশানা করেন মোদি। তিনি বলেন, ‘যারা দুর্নীতি রুখতে এসেছিল তারাই এখন কয়েক হাজার কোটি রুপি দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে বন্দি।’

একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও উন্নয়নশীল সরকার গড়ার ডাক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লালকেল্লা থেকেই আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, এটাই সেই সময় যখন উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত ক্রমশ ওপরের দিকে উঠছে। ২০২৪ সালের নির্বাচন ভারতকে বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির দেশের মধ্যে একটি করে তোলার জন্য। যারা তাদের নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থে ভারতবর্ষকে দেউলিয়া করতে চায়, সেই সব শক্তির হাত থেকে ভারতের অর্থনীতিকে রক্ষার নির্বাচন। এই নির্বাচনে শক্তিশালী ভারত গঠনের নির্বাচন এবং যারা আমাদের দুর্বল করতে চায় সেই শক্তিকে পরাস্ত করার নির্বাচন।’

কংগ্রেসকে নিশানা করে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচনে পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে। এই নির্বাচন হলো সেসব গরিব, মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের জন্য, যারা তাদের জীবনকে সহজ ও সুখী করতে চায়।’

সর্বশেষ খবর