বুধবার, ২২ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাজেট ২০২৪ - ২০২৫

শেয়ারবাজার শক্তিশালী করতে করপোরেট কর কমাতে হবে

ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু

আলী রিয়াজ

শেয়ারবাজার শক্তিশালী করতে করপোরেট কর কমাতে হবে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অন্য সব খাতের মতো অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি দেশের পুঁজিবাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। একটি শক্তিশালী শেয়ারবাজারের জন্য আগামী বাজেটে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। বাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর কমানো উচিত। বর্তমান আরোপিত করহার তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির প্রায় সমান। বাজারে তালিকাভুক্ত হলে বেশি সুবিধা পেলে বাইরে থাকা কোম্পানিগুলো আগ্রহী হবে। দ্বিতীয়ত, বর্তমান তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর আরোপে বহুবিধ পদ্ধতি রয়েছে। কোনো কোনো কোম্পানির অতিরিক্ত কর দিতে হয়। এ বহুবিধ কর পদ্ধতি প্রত্যাহার করে একই পদ্ধতি অনুসরণের জন্য তিনি দাবি জানান।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি। এজন্য বর্তমান বাজারে বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুবিধা দিতে ক্যাপিটাল গেইন প্রত্যাহার করা উচিত। পুঁজিবাজারকে অধিকতর বিকশিত ও গতিশীল করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য করসংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক পুঁজিবাজারে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ওপর ক্যাপিটাল গেইনের ওপর নতুন করে কর আরোপ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হচ্ছে। সে কারণে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট তথা বিনিয়োগকারীদের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ আতঙ্কের প্রভাবে মার্কেট ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। পুঁজিবাজারের বর্তমান এ ক্রান্তিকালে আমরা বিনিয়োগকারী তথা পুঁজিবাজারের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর নতুন করে কর আরোপ না করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি অনুরোধ জানাই। তিনি আরও বলেন, শেয়ারবাজারে আস্থার সংকট চলছে দীর্ঘদিন থেকে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বাজার স্থিতিশীল ও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো যায়নি। তবে এ বাজারে এখনই বিনিয়োগ করার উপযুক্ত সময়। আস্থাহীনতা দ্রুত কেটে যাবে প্রত্যাশা করি। তিনি বলেন, কোম্পানির আইপিও তালিকাভুক্ত করার আইনে কিছু সমস্যা আছে যেগুলো সংস্কার করতে হবে। তবে সংস্কার করতে গিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষপ যেন না থাকে। আমি সব সময় বলে আসছি, সামনেও বলব যে, তালিকাভুক্ত ও তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির মধ্যে করের উল্লেখযোগ্য ব্যবধান না করা গেলে ভালো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত করা যাবে না। আর শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, বাংলাদেশে যেসব গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে সেগুলোও তালিকাভুক্তিতে কাজ করতে হবে। বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি তথা ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করার জন্য বাজেটে ভূমিকা রাখা উচিত। নতুন নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য শেয়ারবাজারকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ রাখতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

সর্বশেষ খবর