ঢাকার পূর্বাচলে বিলকিস বেগম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্বামী মিজানুর রহমান ওরফে সুমনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের বাসন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব বলেছে, রবিবার মিজানুর রহমান তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিস বেগমকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলের জঙ্গলে নিয়ে তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন! গতকাল দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিচালক লে. কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন, মিজানুর পেশায় ট্যাক্সিক্যাব চালক। বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। তবে কয়েক বছর ধরে প্রথম স্ত্রী    শিমু, দেড় বছরের মেয়ে, মাসহ রাজধানীর তুরাগের রানাভোলায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। এ অবস্থায় দুই বছর আগে কাউকে না জানিয়ে বিলকিস বেগমকে (২৬) বিয়ে করে রানাভোলার প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে নয়াপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মিজানুরকে স্বল্প আয়ে দুটি সংসার চালাতে হতো। বিলকিস তিন-চার মাস ধরে মিজানুরের কাছে বেশি টাকা দাবি করলে তাদের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। একপর্যায়ে দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিসকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন মিজানুর। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি মাঝেমধ্যে বিলকিসকে নিয়ে পূর্বাচল এলাকায় ঘুরতে যেতেন এবং সুযোগ খুঁজতেন। লে. কর্নেল মোস্তাক আহমেদ বলেন, মিজানুর রবিবার দুপুরের পর নিজের ট্যাক্সিক্যাবে করে বিলকিসকে নিয়ে পূর্বাচল এলাকায় ঘুরতে যান। তারা পথে চা পান করেন। এ সময় মিজানুর জায়গা ও সুযোগ খুঁজতে থাকেন। বিলকিসকে বিকাল ৪টায় পূর্বাচলের ২৪ নম্বর সেক্টরের একটি জঙ্গলে নিয়ে যান মিজানুর। জায়গাটা খুবই নিরিবিলি দেখে তিনি সেখানে গাড়ি থামান। বিলকিস গাড়িতে বসে থাকেন এবং মিজানুর গাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়ির পাইপ দিয়ে পেট্রল বের করে একটি বোতলে ঢোকান। গাড়িটির ইঞ্জিন তখনো চালু অবস্থায় ছিল। কিছুক্ষণ পর বিলকিস গাড়ি থেকে বের হন। তখন মিজানুর বিলকিসের গায়ে পেট্রল ছিটিয়ে দেশলাই জ্বালিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। এ সময় বিলকিস চিৎকার করতে থাকেন। বিলকিসের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে দ্রুত বিলকিসকে রাজধানীর চানখাঁরপুলের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন সোমবার সকাল ৯টায় বিলকিস মারা যান। র‌্যাব জানায়, ঘটনার পর মিজানুর আত্মগোপনে চলে যান। পরে মিজানুরকে আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং তাকে গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়।