বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতে নির্বাচন

বিজেপি প্রার্থীদের পক্ষে মোদির ১০০ স্থানে বক্তৃতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতের নির্বাচনে ৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে পাঁচ দফায় মোট ৪২৮ আসনে ভোট নেওয়া হয়েছে। রবিবার (২৬ মে) ষষ্ঠ দফা ভোট। নির্বাচনি প্রচার শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর দল বিজেপির প্রার্থীদের পক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তজুড়ে কখনো জনসভা, কখনো রোড শোর মাধ্যমে ১২ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত ৩৮ দিনে মোট ১০০ জায়গায় বক্তৃতা করেছেন। এর মধ্যে তৃতীয় দফার ভোটেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রথম পর্যায়ের ভোটে (১২-১৮ এপ্রিল) ১৩টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে (১৯-২১ এপ্রিল) ১৮টি, তৃতীয় পর্যায়ে (২৬ এপ্রিল-৬ মে) ৩৮টি, চতুর্থ পর্যায়ে (৮-১২ মে) ১৪টি এবং পঞ্চম পর্যায়ে (১৪-১৯ মে) ১৭টি নির্বাচনি প্রচারে অংশ নিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করে সরাসরি বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি থেকে শুরু করে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, রামমন্দিরের উদ্বোধন, সংবিধান, শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ, বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’, আদানি-আম্বানি বিতর্ক ইস্যু-কোনো কিছুই বাদ রাখেননি নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচনি প্রচারে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি যে বিষয়গুলো এবং যে শব্দগুলো তুলে ধরেছেন তা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে পাঁচটি পর্বে নির্বাচনি ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্যাপকভাবে নিজের নাম ব্যবহার করেছেন। বিশেষ করে তৃতীয় ধাপে সবচাইতে বেশি নিজের নাম ব্যবহার করেছেন এবং পরবর্তী ধাপগুলোয়ও একই প্রবণতা দেখা গেছে মোদির মধ্যে। সেই সঙ্গে তাঁর কিছু নির্বাচনি বক্তৃতায় মোদির গ্যারান্টিও উল্লেখ করেছেন। প্রথম দুই দফায় মুসলিম সম্প্রদায় নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও নির্বাচনের দফা যত এগিয়েছে বিশেষ করে তৃতীয় পর্ব থেকে এ শব্দটি ব্যবহার করতে থাকেন এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ পর্বে কংগ্রেস ও মুসলিম সম্প্রদায়কে নিশানা করে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণ ইস্যুটি আলোকপাত করেন। পাশাপাশি প্রতিটি পর্বেই প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে নিশানা করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। কখনো সেই মাত্রা হ্রাস পেয়েছে, কখনো তা বেড়েছে। গত ২০ মে পঞ্চম ভোটের আগে যে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছিলেন মোদি, সেই প্রচারে প্রবলভাবে নিশানা করতে দেখা গেছে বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’কে। তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটের প্রচারেও ইন্ডিয়া জোটকে আক্রমণ করেছিলেন মোদি। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের রামমন্দির ইস্যুকে উত্থাপন না করলেও তৃতীয় দফায় এ ইস্যুটি উত্থাপন করেছিলেন মোদি। ফের চতুর্থ দফা বাদ দিয়ে পঞ্চম দফার প্রচারে রামমন্দির ইস্যুতে দেশজুড়ে ভাবাবেগ তৈরি করার একটা প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের প্রচারে মোদির সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল দুর্নীতি। কখনো কংগ্রেস, তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি আবার কখনো আম আদমি পার্টি-দুর্নীতি ইস্যুতে কাউকেই ছেড়ে কথা বলেননি বিজেপির এই শীর্ষ নেতা।

প্রথম পাঁচ দফার মধ্যে একমাত্র তৃতীয় দফায় সিএএ অর্থাৎ নাগরিকত্ব ইস্যুটি নিয়ে বক্তব্য দিতে শোনা গিয়েছিল মোদিকে। প্রতিবেশী পাকিস্তানকেও চলমান নির্বাচনি প্রচারণায় টেনে এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয় ও পঞ্চম দফার ভোটের নির্বাচনি প্রচারণা থেকে পাকিস্তানের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন মোদি।

পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে নির্বাচনি প্রচারণায় এসে সন্দেশখালি ইস্যুতেও রাজ্যটির শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে নিশানা করতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। সপ্তম ও শেষ দফার ভোট হবে ১ জুন। গণনা ৪ জুন।

সর্বশেষ খবর