শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

আচরণবিধি লঙ্ঘন ঠেকাতে কঠোর ইসি

একজনের প্রার্থিতা বাতিল, দুজনকে তলব ভোট বন্ধ যশোর সদর ও রায়পুরায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ছাড়া পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. এমদাদুল হককে ব্যাখ্যা দিতে ২৬ মে ইসিতে তলব করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে- কেন তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না, সেই ব্যাখ্যা দিতে। একইদিন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরীকে তলব করেছে ইসি। নরসিংদীর রায়পুরা ও যশোর সদর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে কমিশন। এদিকে মঠবাড়িয়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের প্রার্থিতা বাতিলের কথা গতকাল জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম। জানা গেছে, ১৩ মে মঠবাড়িয়ার প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। ইসির পক্ষ থেকে ওইদিন প্রার্থীদের সব ধরনের সভা-সমাবেশ করতে নিষেধ করা হয়। কমিশনের আদেশ অমান্য করে মঠবাড়িয়া পৌরসভার সামনে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করেন রিয়াজ। এরপর ১৪ কারণ দর্শানো হলে রিটার্নিং অফিসারের কাছে জবাব দেন এ প্রার্থী। এতে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় কেন প্রার্থিতা বাতিল করা হবে না- ব্যাখ্যা দিতে ২৩ মে কমিশনে তলব করা হয়। ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, শুনানিতে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন রিয়াজ। ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্যাদি পর্যালোচনা ও শুনানি নেওয়ার পর আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাটি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন সর্বসম্মতভাবে এ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করে। এদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা বাতিল কেন করা হবে না তা জানতে চেয়ে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরীকে তলব করেছে ইসি। ২৬ মে সকাল ১১টায় এ প্রার্থীকে নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলে ইসি। তৃতীয় ধাপেও ২৯ মে এ উপজেলায় ভোটের কথা রয়েছে।

রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত : নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার সব পদে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে একজন বৈধ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সব পদে নির্বাচন স্থগিত করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। জানা গেছে, নির্বাচনি প্রচার চালানোর সময় সুমন মিয়া নামে ওই প্রার্থী অপর প্রার্থীর হামলায় নিহত হন। আইন অনুযায়ী, কোনো বৈধ প্রার্থীর মৃত্যু হলে সেখানে সব পদে ভোট স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

যশোর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত : আইনি জটিলতা থাকায় যশোর সদর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল স্থগিতদের সিদ্ধান্ত দেয় সংস্থাটি। ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনাও পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে ২৯ মে অনুষ্ঠেয় যশোর জেলার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মো. শাহারুল ইসলাম হাই কোর্ট বিভাগে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার জন্য রিট পিটিশন দায়ের করলে হাই কোর্ট বিভাগ ১৩ মে আদেশে মো. শাহারুল ইসলামকে নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ তার অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দের জন্য আদেশ দেন। পরবর্তীতে হাই কোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগে সিপিএলএ নম্বর ১৭১৩/২২৪ দায়ের করলে ২০ মে ২০২৪ তারিখের আদেশে ‘নো-অর্ডার’ দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এ আদেশ বাস্তবায়নের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ২৯ মে অনুষ্ঠেয় যশোর সদর উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচনের সব পদের নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেয়।

সর্বশেষ খবর