শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

মাছের ডিম বিপর্যয়ের শঙ্কা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

শেষ জো’র অপেক্ষায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র এবং বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারীরা। মা মাছ ডিম ছাড়ার জন্য ছয়টি জো (অমাবস্যায় প্রজনন সময়) নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে চারটি জো প্রায় শেষ। কিন্তু হালদার মা মাছ সামান্য কিছু নমুনা ছাড়লেও মূল ডিম ছাড়েনি। ফলে ডিম ছাড়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে ডিম সংগ্রহকারীরা এখনো শেষ জো’র জন্য অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন। জো’র সময় মুষলধারে বৃষ্টি এবং প্রবল পাহাড়ি ঢলে উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ডিম ছাড়ে মা মাছ। হালদায় কার্প জাতীয় রুই প্রাকৃতিক নিয়মেই ডিম ছাড়ে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মা মাছের ডিম ছাড়ার ছয়টি জো চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম জো ছিল ৫ থেকে ১১ এপ্রিল, দ্বিতীয় জো ২০ থেকে ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় জো ৪ থেকে ১০ মে ও চতুর্থ জো ২০ থেকে ২৬ মে। চতুর্থ জোও প্রায় শেষ পর্যায়ে। বাকি আছে ২ থেকে ৮ জুন পঞ্চম এবং ১৯ থেকে ২৫ জুন ষষ্ঠ জো। এখন শেষ দুটি জো’র অপেক্ষায় আছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।

হালদার প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দুটি জো’র অপেক্ষায় আছি।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘বর্তমানে হালদার পানির পরিবেশ ইতিবাচক আছে। এখন কেবল দরকার মূষলধারে বৃষ্টি ও প্রবল পাহাড়ি ঢল।’

জানা যায়, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুনের জো’র মধ্যে হালদার মা মাছ ডিম ছাড়ে। মা মাছ প্রথমে নমুনা ডিম ছেড়ে নদীর পরিবেশ যাচাই করে। পরিবেশ অনুকূল হলে পুরোদমে মূল ডিম ছাড়ে। এ হিসেবে গত ৭ মে মা মাছ হালদার রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে অল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছাড়ে। কিন্তু এরপর বৃহৎ পরিসরে আর মূল ডিম ছাড়েনি। হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে হালদা থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার কেজি। ২০২২ সালে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কেজি, ২০২১ সালে সাড়ে ৮ হাজার কেজি, ২০২০ সালে ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি, ২০১৯ সালে প্রায় ৭ হাজার কেজি, ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে মাত্র ১ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে ২ হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে পানির পরিবেশ ভালো থাকায় এবার আশানুরূপ ডিম সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করছেন সংগ্রহকারীরা।

সর্বশেষ খবর