সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাজেট ২০২৪ - ২০২৫

প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে নজর দেওয়া জরুরি

--- ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

মানিক মুনতাসির

প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে নজর দেওয়া জরুরি

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, মানুষ অর্থনৈতিকভাবে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মানুষের জীবন ধারণের খরচ বেড়েছে অনেক গুণ। অথচ আয় বাড়েনি মোটেও। জনগণের এই কষ্ট লাঘবে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আর্থিক ও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের সংস্কারে উদ্যোগ নিতে হবে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ওই তিনটি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। বর্তমানে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, আগামী বাজেটের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে প্রথমত জনগণের কষ্ট লাঘব হবে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা মানুষ অর্থনৈতিকভাবে খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মানুষের জীবন ধারণের খরচ বেড়েছে অনেক গুণ। অথচ আয় বাড়েনি মোটেও। মানুষের জীবন ধারণের খরচ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের আয় বাড়ে, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ে সেরূপ উদ্যোগ নিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক ঝুঁকিগুলোকে আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রায় সব সূচকই নেতিবাচক পর্যায়ে রয়েছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে  হবে। রিজার্ভের অব্যাহত পতন ঠেকাতে হবে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট সমাধান করতে হবে। আমদানি ব্যয় কমানো গেলেও রপ্তানি আয় না বাড়ায় ডলারের সংকট কাটছে না। এই সমস্যাগুলোর সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখাই এখন জরুরি। মূল্যস্ফীতির চাপের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কার্যকর পদক্ষেপ থাকতে হবে বাজেটে। তৃতীয়ত, আর্থিক খাতের কাঠামোগত সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে ব্যাংক ও আর্থিক খাতের পরিস্থিতি প্রতিদিনই খারাপ হচ্ছে। এ খাত নিয়ে সবার মধ্যে উদ্বেগও বাড়ছে। ব্যাংক খাতের জন্য একটি সংস্কার কমিশন করার কথা বলা হলেও তা হয়নি। হচ্ছে না। আর্থিক খাতের নানা রকেম জালিয়াতিগুলোও বন্ধ করা জরুরি। এসব বিষয়গুলোকে আগামী বাজেটে এড্রেস করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতির চাপ সামলাতে ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সরকার এক সময় নতুন করে টাকা ছাপিয়ে চাহিদা মিটিয়েছে। এখন অবশ্য অনেক দিন হলো সরকার এটা থেকে সরে এসেছে। কিন্তু এতেও মূল্যস্ফীতির চাপ কমেনি। বরং আরও বেড়েছে। এজন্য বাজার ব্যবস্থায়ও এক ধরনের সংস্কার করা জরুরি। এখানে বাজারে তেমন কোনো মনিটরিং নেই। এ জন্য কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। 

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজকর্মে তেমন কোনো গতি নেই। একই রকম গতি বহু বছর ধরেই। এর কারণে বিনিয়োগকারীরা কাক্সিক্ষত সেবা পান না। এতে বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক দিন ধরে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ২২ শতাংশে আটকে রয়েছে। এটাকে গিয়ারআপ করতে হলে সরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মানোন্নয়ন করতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ডলারের সরবরাহ বাড়াতে হবে।

সর্বশেষ খবর