সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

ঝুলে আছে বৈরালির স্বীকৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

ঝুলে আছে বৈরালির স্বীকৃতি

পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতরে দেশের সম্ভাব্য ১৫১ জিআই পণ্যের তালিকায় রংপুরে তিস্তা নদীর সুস্বাদু বৈরালি মাছের নাম থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো দফতরই আবেদন করেনি। আবেদন না করায় বৈরালি মাছের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। জানা গেছে, বৈরালি মাছ রংপুরের মানুষের অহংকার।   

রুপালি এই মাছটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। তিস্তা নদীতে এই মাছ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। দেশের অন্য অঞ্চলে এই মাছ খুব একটা পাওয়া যায় না। বৈরালি মাছ সর্বোচ্চ ৬-৭ ইঞ্চি বা ১০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং প্রস্থে প্রায় ১ ইঞ্চি আকারের হয়ে থাকে। রূপালি রঙের মাছটির গায়ে ছোট ছোট আঁশ, পিঠের রং হালকা মেটে। পেটের নিচে হলুদ দাগ থাকে। মাছটির পুঁটি মাছের মতো কাঁটা থাকলেও তা খুবই নরম। বৈরালি মাছ গ্রীষ্মকালীন সময়ে বংশ বিস্তার করে থাকে। মাছটি সুস্বাদু এবং অনুপুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ হওয়ায় রংপুর অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়।

চার প্রকারের বৈরালি মাছ পাওয়া যায়। তিস্তা নদী ও চিকলি, ঘাঘট, বুড়ি তিস্তা নদী এবং ব্রহ্মপুত্র নদে বৈরালি মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, লালমনিরহাট এবং নীলফামারীর তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় এই মাছ প্রচুর পাওয়া যায়। আকার ভেদে এই মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি বিক্রি হয়। এই মাছটি আঞ্চলিক অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে নিবন্ধিত জিআই পণ্যের সংখ্যা ৩২টি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা ১৫১টি পণ্যকে সম্ভাব্য ভৌগোলিক পণ্যের তালিকায় রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বৈরালি মাছ রয়েছে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এই মাছের জিআই স্বীকৃতির জন্য কোনো আবেদন করা হয়নি। রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে হলে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে ঐতিহাসিক কোনো দলিল। কিন্তু রংপুরের কোনো লেখক এবং ইতিহাসবিদের বৈরালি মাছ নিয়ে কোনো লেখা পাইনি। তবে বৈরালি মাছ, খটখটিয়ার বেগুনসহ আরও দু-একটি পণ্যের জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যেসব শর্ত পূরণ করা প্রয়োজন এ লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর