শনিবার, ১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবনের বিভিন্ন চর থেকে আরও ৩১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল নতুন করে এই মৃতদেহ উদ্ধার করে মাটিচাপা দিয়েছেন বনরক্ষীরা। এর আগে ঝড়ের পর থেকে বুধবার পর্যন্ত বনের বিভিন্ন চর থেকে ৯৬টি হরিণ এবং চারটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ।  এ নিয়ে ঘূর্ণিঝড় রিমালের পর সুন্দরবন থেকে মোট ১২৭টি হরিণসহ ১৩১ বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করল বন বিভাগ। এ ছাড়া জীবিত ও আহত অবস্থায় ১৮টি হরিণ ও একটি অজগর সাপ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ।

গতকাল রাতে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তান্ডবে সুন্দরবনের অনেক ক্ষতি হয়েছে। জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসের পানিতে সুন্দরবনের বেশির ভাগ অংশ প্লাবিত হয়েছে। মিষ্টি পানির পুকুরগুলো সব লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের পর বনের কটকা, কচিখালী, করমজল, পক্ষীর চর, ডিমের চর, শেলার চর ও নারিকেলবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে হরিণের ১২৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চারটি বন্য শূকরের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮টি জীবিত হরিণ এবং একটি জীবিত অজগর উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। অধিক উচ্চতার জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় সুন্দরবনের ভিতরে প্রাণীদের আশ্রয়ের জন্য উঁচু ডিবির পাশাপাশি মিঠাপানি ও খাবারের সংস্থান বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন এই বন সংরক্ষক। তিনি বলেন, সুন্দরবনে বাঘ সংরক্ষণে একটি প্রকল্পের আওতায় কিছু মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়েছিল; সেই প্রকল্প এখনো চলমান আছে। সুন্দরবনে ১২টি উঁচু কিল্লা রয়েছে। তবে এখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন নতুন দুর্যোগ আসছে। তাই এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাণীদের সংরক্ষণে আরও কী কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে ভাবা হবে। বন বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৭ সালে সিডরের পর সুন্দরবনে ৪০টি হরিণ, একটি বাঘ ও একটি তিমির মৃতদেহ পাওয়া যায়। ২০০৯-এ ঘূর্ণিঝড় আইলার পর তিনটি হরিণ ও একটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হওয়া ঝড়গুলোতে বাঘ, হরিণসহ অন্য কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি। ২০২১ সালের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে চারটি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর