শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোটাবিরোধী বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্রতিদিন ডেস্ক

কোটাবিরোধী বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়ে

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা বলেছেন, লড়াইয়ের মাধ্যমে ‘কোটা ষড়যন্ত্র’ রুখে দেওয়া হবে। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

ঢাবি : গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র সমাজে’র ব্যানারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, রায় প্রদানের ক্ষেত্রে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে আমলে নেননি হাই কোর্ট। তাই আদালতের এ রায়কে প্রত্যাখ্যান করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরতদের বক্তব্য, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে নিঃসন্দেহে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য মানা কষ্টদায়ক। চাকরিতে কোটা বহাল রাখা হলে শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালকে প্রতারণামূলক আখ্যায়িত করে রাজপথে ও আদালতে লড়াইয়ের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধনে তারা এ কথা জানান। মানববন্ধনে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, যে  কোটা ব্যবস্থা ২০১৮ সালে কবর দেওয়া হয়েছে, কোনোভাবেই তা ফিরিয়ে আনা যাবে না। কোটা প্রথা ফিরিয়ে আনলে মেধাবীরা যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবে না। আদালতে রায় আদালতে মোকাবিলা করতে আমরা আপিল করব। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, কোটা ব্যবস্থা সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। এটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলে আমরা আবারও রাজপথে আন্দোলনে নামব। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র আসাদ বিন রনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ছাত্র সানাউল্লাহ প্রমুখ।

রাবি : সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ সমাবেশ হয়। সমাবেশে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা বলেন, হাই কোর্টের রায় অনুযায়ী মোট কোটা আছে ৫৬ শতাংশ। যা মেধাবীদের জন্য চরম বৈষম্য। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সামনে এগিয়ে যেতে চাই। তবে কোনোরকম বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মেধার জোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি। কোটায় সাবজেক্ট আসা সত্ত্বেও আমি ভর্তি হইনি। আমার মেধার ভিত্তিতে যে সাবজেক্ট এসেছে সেটায় ভর্তি হয়েছি। এই কোটা সংস্কৃতি মেধাবীদের বঞ্চিত করছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নই। তবে কোনো বৈষম্য চাই না।

এ সময় ‘কোটা বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই’- স্লোগান দিতে শোনা যায়। আন্দোলন বিভিন্ন বিভাগের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

জবি : কোটা পুনর্বহাল আদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এদিন বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ আন্দোলন শুরু হয়। এরপর সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি ভিক্টোরিয়া পার্ক এবং বাংলাবাজার ঘুরে পুনরায় প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘চাকরিতে কোটা, মানি না মানব না’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়/স্বাধীনতার বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, ‘হাই কোর্টের রায়, মানি না মানব না’, ‘কোটা পদ্ধতি, কোটা পদ্ধতি, মানি না মানব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা কোনো দেশের স্বাভাবিক শিক্ষাব্যবস্থা হতে পারে না। দেশের বিপুল সংখ্যক বেকার সমস্যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ওপর কোটার মতো বৈষম্যমূলক বিভীষণ চাপিয়ে দেওয়া হলে বেকার সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

সর্বশেষ খবর