শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভোটার বেশি মনপুরায় কম নওগাঁ সদরে

ভোট বিশ্লেষণ - ► ৮ উপজেলায় ২৫ শতাংশের কম ভোট ► চতুর্থ ধাপে ভোটের হার ৩৪.৭৭ শতাংশ ► ব্যালটে ৩৫.৬০ ও ইভিএমে ২৯.৭০ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। আগামী ৯ জুন স্থগিত বেশ কিছু নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে শেষ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোটারের খরা সব চেয়ে বেশি দেখা গেছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৩৬.১০ শতাংশ; দ্বিতীয় ধাপে ৩৭.৫৭ শতাংশ; তৃতীয় ধাপে ৩৬.২৪ শতাংশ এবং চতুর্থ ধাপে ভোট পড়েছে ৩৪.৭৭ শতাংশ। চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ৩৪.৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। গতকাল ইসি প্রকাশিত ভোটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চতুর্থ ধাপে সব চেয়ে কম ভোট পড়েছে নওগাঁ সদরে। আর বেশি ভোট পড়েছে ভোলার মনপুরায়।  উপজেলা পরিষদে চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৩৪.৭৭ শতাংশ। ৮ উপজেলায় ২৫ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। গতকাল মাঠপর্যায় থেকে পাঠানো তথ্য একীভূত করে এ তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বুধবার চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন হয়।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৬০ উপজেলায় মোট ভোটার ছিল ১ কোটি ৪১ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭২ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৪৯ লাখ ৩৩ হাজার ৫৫৫ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ৩৪.৭৭ শতাংশ। এ ধাপে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ভোলার মনপুরা উপজেলায় ৬০.৬৮ শতাংশ। সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে নওগাঁ সদরে ২০.৮৭ শতাংশ। বিশ্লেষকদের মতে, দলীয় কোন্দল, একটি বড় দলের ভোটে না আসা, প্রার্থীর অজনপ্রিয়তা, শহর এলাকায় শ্রমিকদের অনুপস্থিতি এবং বৈরী আবহাওয়া, হাওরে ধান কাটার ব্যস্ততার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। কেননা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনেও যে ভোট পড়েছিল; উপজেলা নির্বাচনে সেই ভোটাররাও কেন্দ্র আসছেন না। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সারা দেশে মোট ৪১.৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল। কিন্তু উপজেলায় ভোটারের উপস্থিতি ৩৬-৩৭ শতাংশের ওপরে উঠছে না। উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে ৩৬.২৪ শতাংশ। ৯ উপজেলায় ২৫ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। মাঠপর্যায় থেকে পাঠানো তথ্য একীভূত করে এ তথ্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ২৯ মে এ ধাপের ভোট হয়। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ৮৭ উপজেলায় মোট ভোটার ছিল ২ কোটি ১১ লাখ ৫৪ হাজার ১৮৫ জন। এদের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ৯৫৩ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ৩৬.২৪ শতাংশ। এ ধাপে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় ৫৮.৮৩ শতাংশ।  সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে লক্ষ্মীপুর সদরে ১৩.৬৪ শতাংশ। এর আগে গত ৮ মে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৬.১০ শতাংশ। ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলা নির্বাচন ভোট পড়ে ৩৭.৫৭ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ভোট পড়েছে ৭৪. ৯৫ শতাংশ : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে গড়ে ভোট পড়েছে ৩৭.৫৭ শতাংশ। ইসির এ ধাপের একীভূত ফলাফল বিশ্লেষণে এ তথ্য মিলেছে। এ ধাপে সব চেয়ে ভোটের হার বেশি পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলায়। এ উপজেলায় ভোট পড়েছে ৭৪.৯৫ শতাংশ। সব থেকে কম ভোট পড়েছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায়। এ উপজেলায় ভোটের হার ১৭.৯৮ শতাংশ। দ্বিতীয় ধাপে ভোটের হার প্রথম ধাপের চেয়ে বেড়েছিল। দ্বিতীয় ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৭টি উপজেলায় একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর মধ্যে দুই উপজেলায় তিনটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলায় নির্বাচন হলেও তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী বিজয়ী হওয়ায় ওই তিনটির ফলাফল ইসি থেকে সমন্বয় করা হয়নি। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৩টি উপজেলার চেয়ারম্যান পদের ফলাফল সমন্বয় করা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে ব্যালটে অনুষ্ঠিত ১২৯টি উপজেলায় গড়ে ভোট পড়েছে ৩৮.৪৭ শতাংশ। আর ইভিএমে অনুষ্ঠিত ২৩টি উপজেলায় গড়ে ভোট পড়েছে ৩২.১৭ শতাংশ। ইসির জনসংযোগ পরিচালক জানান, ১৫৩টি উপজেলায় ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬২০ ভোটারের মধ্যে ১ কোটি ২৫ লাখ ৮৩ হাজার ৯৪৭ জন তাদের ভোটাধিকর প্রয়োগ করেছেন। সবশেষ ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়ে। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে ৬১ শতাংশ এবং ২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ৬৭.৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে। দেশের মোট ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলা পরিষদে চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। ৯ জুন স্থগিত উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা আছে।

সর্বশেষ খবর