শুক্রবার, ৭ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

লক্ষ্য পূরণ হয়নি চা উৎপাদনে

আজহার মাহমুদ, চট্টগ্রাম

লক্ষ্য পূরণ হয়নি চা উৎপাদনে

দেশে চা চাষের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০২৩ সালে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চা উৎপাদনের পর চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে চা উৎপাদনে রীতিমতো ধস নেমেছে। আগের বছরের তুলনায় ৬০ লাখ কেজি বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হলেও বছরের প্রথম তিন মাসে চা উৎপাদন হয়েছে মাত্র ১৭ লাখ ৪৮ হাজার কেজি, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১.৬২ শতাংশ। সাধারণত, বছরের শুরুর দিকে উৎপাদনের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও এবারের উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়েও কম। চা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২২ সালে ১০ কোটি কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেশের বাগানগুলোতে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়। আর ২০২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ কোটি ২০ লাখ কেজি। উৎপাদন হয় ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি বেশি। দুই বছরের ধারাবাহিকতায় দেশের ১৬৮টি বাগান থেকে ২০২৪ সালে ১০ কোটি ৮০ লাখ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

চা বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১ লাখ ৭৫ হাজার কেজি, ফেব্রুয়ারিতে ৪২ হাজার কেজি এবং মার্চ মাসে ১৫ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এপ্রিল মাস শেষ হয়ে গেলেও এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত চা বোর্ড ওই মাসের উৎপাদনের হিসাব দিতে পারেনি। সেই হিসেবে প্রথম তিন মাসে উৎপাদিত হয়েছে ১৭ লাখ ৪৮ হাজার কেজি চা। পূর্ববর্তী বছরগুলোয় একই সময়ে চা উৎপাদনের পরিমাণ বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। তবে এবারের উৎপাদন তার চেয়েও কম হয়েছে। বোর্ডের হিসাবে, ২০২২ সালের জানুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে চা উৎপাদন হয় ২১ লাখ ২৫ হাজার কেজি। ২০২৩ সালের একই সময়ে উৎপাদন হয় ২৪ লাখ ৫৭ হাজার কেজি। চা বোর্ডের কর্মকর্তা ও বাগান মালিকদের ভাষ্য, নতুন চারা গাছ বেড়ে না ওঠা, অনূকূল আবহাওয়া না থাকাসহ নানা কারণে প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত উৎপাদনের পরিমাণ কম থাকাকে স্বাভাবিকভাবেই নেওয়া হয়। মে-জুন মাসে বৃষ্টি হলে গাছগুলো দ্রুত বাড়তে থাকে। শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদনের পরিমাণ বেশি হয়। তবে চলতি বছর অধিক তাপমাত্রাসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়েও কম। এ ব্যাপারে জানতে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এনডিসিকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে চা বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, বছরের শুরুতে উৎপাদন একটু কম হয়। আবহাওয়াসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অনুকূলে থাকলে আগামী মাস থেকে উৎপাদন বাড়বে। আশা করি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সমস্যা হবে না। বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যান কামরান তানভীরুল রহমান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আবহাওয়া খারাপ ছিল। তবে অন্য বছরের তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়তে হতে পারে।

সর্বশেষ খবর