ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার খুনের নেপথ্যে তিনটি কারণকে গুরুত্ব দিচ্ছেন গোয়েন্দারা। ঢাকায় গ্রেফতার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে তিন কারণ। গোয়েন্দারা বলছেন, শাহিনের সঙ্গে আনারের হুন্ডি কারবার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল; সীমান্তে স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে ব্যবসায়িক বিরোধ তৈরি হয়েছিল এবং শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে চরমপন্থা ও রাজনৈতিক আদর্শগত বিরোধ ছিল এমপি আনারের। এদিকে আনার হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদার ওরফে কসাই জিহাদের ১২ দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। আজ তাকে বারাসাত আদালতে হাজির করা হবে। তাকে ফের রিমান্ডে নেওয়া হতে পারে। ২৪ মে তাকে ১২ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পশ্চিমবঙ্গ পুুলিশ তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। ২৩ মে কসাই জিহাদকে মুম্বাই থেকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি। জিহাদ জেরার মুখে এমপি আনার হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন।
শিমুল ভূঁইয়া ছিলেন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (লাল পতাকা) একজন শীর্ষ নেতা। খুলনা, ঝিনাইদহ ও যশোরে সংগঠনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকারী। এ কাজে বাধা ছিলেন এমপি আনার। এর মধ্যে আক্তারুজ্জামান শাহিন এমপি আনার হত্যার পরিকল্পনা করলে শিমুল রাজি হন এবং যৌথভাবে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। শিমুল ভূঁইয়া স্বীকার করেছেন, এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কলকাতায় হত্যা মিশন শেষ করে ১৫ মে তিনি দেশে ফিরে আসেন। গত বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) তোফাজ্জল হোসেন জবানবন্দি রেকর্ড করেন শিমুল ভূঁইয়ার। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। ডিবি পুলিশ সূত্রমতে, গত ১২ মে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে এমপি আনার ভারতে যান। কলকাতায় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউটাউনের ফ্ল্যাটে নেওয়া হয়। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি রহমান, শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, সহযোগী জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। খুনের আগেই আক্তারুজ্জামান শাহিন চলে আসেন ঢাকায়। নিউটাউনের ফ্ল্যাটেই এমপিকে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করা হয়।
