মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
টিলা ধসে চাপা

রাতের ঘুম থেকেই চিরঘুমে তিনজন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

রাতের ঘুম থেকেই চিরঘুমে তিনজন

রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন পরিবারের সবাই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই ঘটে ট্র্যাজেডি। ভেঙে পড়ে ঘরের পাশের টিলা। ভারী বর্ষণে ভেঙে পড়া টিলার মাটির নিচে চাপা পড়েন একই পরিবারের ১১ জন। স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের চেষ্টায় জীবিত উদ্ধার করা হয় আটজনকে। আর বাকি তিনজনের ঘুম ভাঙেনি। ঘুম থেকে চিরঘুমে চলে যান স্বামী, স্ত্রী ও দুই বছরের শিশু সন্তান। প্রায় ৬ ঘণ্টা চেষ্টার পর সেনাবাহিনীর সহায়তায় মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের লাশ। এ ঘটনা ঘটে গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিলেট মহানগরীর চামেলীবাগের ২ নম্বর রোডের ৮৯ নম্বর বাসায়। মাটিচাপায় নিহতরা হলেন ওই বাসার মৃত আগা রফিক উদ্দিনের ছেলে মো. আগা করিম উদ্দিন (৩১), তার স্ত্রী শাম্মী আক্তার রোজী (২৫) ও তাদের দুই বছর বয়সী ছেলে নাফজি তানিম। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। মাটিচাপায় আটজনকে জীবিত ও তিনজনের লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহপরাণ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী। আহতরা হলেন আগা করিম উদ্দিনের বড় ভাই আগা রহিম উদ্দিন, রহিম উদ্দিনের মা, স্ত্রী ও ছেলে, চাচা আগাম মাহমুদ উদ্দিন, আগা বাবুল উদ্দিন, আগা বাচ্চু উদ্দিন ও আগা শফিক উদ্দিন।

স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মো. আগা করিম উদ্দিনের বাসার অদূরের একটি টিলা ধসে পড়ে। টিলার মাটি গড়িয়ে তাদের আধাপাকা বাড়িকে চাপা দেয়। এতে করিম উদ্দিনের পরিবারের ১১ সদস্য মাটিচাপা পড়েন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে আটজনকে জীবিত উদ্ধার করে। বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও সিটি করপোরেশনের এস্কাভেটর ভিতরে ঢুকতে না পারায় উদ্ধার কাজ ব্যহত হয়। পরে সেনাবাহিনীর একটি দলও উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মাটির নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় মো. আগা করিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী-সন্তানকে।

স্থানীয়রা জানান, চামেলীবাগ ও আশপাশ এলাকায় বেশ কিছু টিলা ছিল। প্রভাবশালীরা এসব টিলা কেটে প্লট তৈরি করে বিক্রি করেন। পরে এসব প্লটে বাসাবাড়ি নির্মাণ করা হয়। ফলে বর্ষা মৌসুম এলেই টিলা ধসের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী (এনডিসি) ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের গৃহনির্মাণসহ আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

 

 

সর্বশেষ খবর