বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
কোরবানির পশু

ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে নজরদারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোরবানির পশুর কৃত্রিম সংকট ঠেকানো, চামড়া ও পশু কেনাবেচায় ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং পশুবাহী যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এবার সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নজরদারি করা হবে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়ক যানজটমুক্ত রাখা, সড়ক-নৌ-রেলপথে দুর্ঘটনা হ্রাস, রেলে শিডিউল বিপর্যয় রোধ, সহজে টিকিট প্রাপ্তিসহ সব ধরনের ভোগান্তি  ও হয়রানি বন্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে এক গুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, পুলিশ মহাপরিদর্শক, এফবিসিসিআই, বিজিএমইএর প্রতিনিধি, বিভিন্ন দফতর/সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, সড়কপথে ঈদযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহকে নিজেদের মধ্যে আন্তসমন্বয়ের মাধ্যমে সব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। পুলিশ মহাপরিদর্শক যানজটমুক্ত ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে হটস্পট চিহ্নিতকরণ, হটস্পটসমূহে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহের দায়িত্বশীল জনবলের উপস্থিতি ও প্রয়োজনীয় সমন্বয় নিশ্চিত করবেন। মহাসড়কের পাশে কিংবা যত্রতত্র কোরবানির পশুর হাট স্থাপনের অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তদফতর সমন্বয়ে নিশ্চিত করতে হবে। এফবিসিসিআই ও বিজেএমইএ তাদের কর্মীদের একত্রে ছুটি না দিয়ে ধাপে ধাপে দেবে। রেলযাত্রা, রেলের টিকিটপ্রাপ্তি এবং শিডিউল রক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে টিকিট প্রাপ্তিতে যে কোনো ধরনের ভোগান্তি, হয়রানি, প্রতারণারোধে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নৌ-যানসমূহে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন রোধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নৌ-যানসমূহের ফিটনেস নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চ, ফেরি ও নৌ-ঘাটসমূহের নিরাপত্তা, যাত্রীবান্ধব ঘাট ব্যবস্থাপনা এবং টিকিটপ্রাপ্তির সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। বিমানযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি বিমান পরিচালনাকারী সংস্থাসমূহ বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস তাদের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল বাড়াবে।

এ ছাড়া সভায় আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর সহজলভ্যতা, পরিবহন, হাট ব্যবস্থাপনা, অনলাইন মার্কেট মনিটরিং, ঈদযাত্রা, কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা, ঈদ ফিরতি যাত্রাসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি, কার্যক্রম ও আন্তদফতর নিবিড় সমন্বয়, ঈদপূর্ব সময়ে নিত্যপণ্যের সরবরাহ, মজুত ও মূল্যনিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর কোরবানিযোগ্য পশুর যথেষ্ট জোগান রয়েছে। উদ্বৃত্ত পরিমাণ কোরবানির পশুর সরবরাহ থাকায় কোনো সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, কোরবানির পশুর হাটসহ পশু পরিবহন, ক্রেতা-বিক্রেতার নিরাপত্তা এবং যে কোনো ধরনের প্রতারণারোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির বিষয়ে যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে প্রত্যক্ষ ও সরেজমিন তত্ত্বাবধানে স্বল্পতম সময়ে শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করতে হবে এবং পূর্ব থেকেই পরিকল্পনামাফিক পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং বর্জ্য পরিবহনকারী গাড়িসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করে চামড়ার মূল্য নির্ধারণসহ চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয় সার্বিকভাবে বিবেচনা করে স্থানীয় বাস্তবতার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেবে।

সর্বশেষ খবর