বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস

প্রবৃদ্ধি হবে ৫.৭ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এরপর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রবৃদ্ধির টার্গেট ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। গতকাল বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’ শীর্ষক জুন মাসের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ আরও কিছু ঝুঁকির কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক। বৈশ্বিক অর্থনীতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত তিন বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতি এবারই প্রথম স্থিতিশীল হবে। ২০২৪ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ আর ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হবে ভারতের ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ও ভুটানের একই হারে অর্থাৎ ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া নেপালের ৪ দশমিক ৬ ও পাকিস্তানের ২ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসবে। প্রাথমিক হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। সেই হিসাবে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির গতি কমবে। এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ; ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরের পর টানা দুই অর্থবছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৬ শতাংশের নিচে। সংস্থাটি মনে করে, বাংলাদেশে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি কেনাকাটা ও বিনিয়োগের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড একভাবে চলে যাচ্ছে, কিন্তু উচ্চমূল্যের কারণে মানুষের প্রকৃত মজুরি ও পরিবারের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এতে ব্যক্তি মানুষকে ভোগের রাশ টানতে হয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় সরকার দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করায় ঋণের সুদহার বেড়েছে। এতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমেছে; টান পড়ছে সমাজের চাহিদায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে যেসব বাধা আসতে পারে, সেগুলো সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলছে, বিশ্বায়িত পৃথিবীতে এক দেশের সমস্যা কেবল সেই দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না। অর্থাৎ বাংলাদেশের বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমলে তার নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাংলাদেশও মুক্ত থাকবে না। যেমন চীন বাংলাদেশের আমদানির মূল উৎস। চীনের অর্থনীতি গতি হারালে মধ্যবর্তী পণ্য ও উপকরণ আমদানিতে প্রভাব পড়বে। আরেক দিকে বাংলাদেশের রপ্তানির মূল গন্তব্য ইউরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রত্যাশিত চাহিদা না থাকলে রপ্তানিতে প্রভাব পড়বে।

সর্বশেষ খবর