শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেকর্ড ভেঙেছে ডিম, ঊর্ধ্বমুখী আলু পিঁয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রেকর্ড ভেঙেছে ডিম, ঊর্ধ্বমুখী আলু পিঁয়াজ

কোরবানির ঈদের আগেও নিত্যপণ্যের বাজার সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। ডিমের দাম ডজনপ্রতি রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে ১৬০ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এক মাস আগেও  ১২৫ টাকা ডজন বিক্রি হয়েছে ডিম।

একইভাবে মাস খানেক আগেও ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া পিঁয়াজ এখন বাজারে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যটির কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। ভরা মৌসুমেও প্রতি কেজি আলু কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকা, যা এক কেজি মোটা চালের দামের চেয়েও বেশি। এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নিত্যপণ্যের ওপর উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এই ঘোষণার প্রভাব পড়েনি নিত্যপণ্যের বাজারে। কোরবানির ঈদকে ঘিরে এরই মধ্যে বাজারে পিঁয়াজ, আদা, আলু ও কাঁচা মরিচসহ বেশ কিছু পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখা ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে অন্তত ২৭টি প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যশস্য সরবরাহের ওপর উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব পণ্যে উৎসে কর ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা হচ্ছে। পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে- পিঁয়াজ, রসুন, মটর, ছোলা, চাল, গম, আলু, মসুর, ভোজ্য তেল, চিনি, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ডাল, ভুট্টা, ময়দা, আটা, লবণ, গোলমরিচ, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা ইত্যাদি। আমদানি শুল্ক কমানো হলেও বাজারে দাম কমার লক্ষণ নেই।

ক্রেতাদের অভিযোগ, ভোক্তারা ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি। সরকার দাম বাড়ালে মিনিটের মধ্যে কার্যকর হয়। আর দাম কমালে দিনের পর দিন তা কার্যকর হয় না। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। কার্যকর হয়েছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করারও যেন কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূইয়া বলেন, উৎসে কর ভোক্তার স্বার্থে শূন্য করা উচিত। এই কর কমলে বাজারে অল্প হলেও প্রভাব পড়বে। বাজার মনিটরিংয়ের অভাবে দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সরকারের এতগুলো সংস্থা ভোক্তা অধিকার ছাড়া আর কাউকে বাজার মনিটরিংয়ে দেখা যায় না। রাজধানীর বাজারগুলোতে আলু বাজেটের আগে ৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পিঁয়াজ গত সপ্তাহে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। আদা কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে মানভেদে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত আছে রসুনের দাম। দেশি রসুন কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে ব্রয়লার ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অস্থির মসলার বাজারও। এর মধ্যে দাম বেড়েছে জিরা, দারুচিনি ও লবঙ্গের। প্রতি কেজি জিরার দাম ৭০-৮০ টাকা বেড়ে ৭৫০ টাকা, ১২০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ ১ হাজার ৭০০ টাকা, দারুচিনি ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮২০ থেকে ৮৩০ টাকা। এখনো বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে হলুদ, এলাচ। হলুদ কেজিপ্রতি ২৬০, এলাচ ৪ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। রামপুরা বাজারের মসলার ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, বাজেটে শুল্ক বা ট্যাক্স কমালেও তাৎক্ষণিকভাবে দাম কমার সুযোগ নেই। এখন যেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে তা অনেক আগের কেনা পণ্য। শুল্ক কমানোর প্রভাব পড়তে এক মাসের বেশি সময় লাগবে।

সর্বশেষ খবর