রবিবার, ২৩ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

মানববন্ধনে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর বাঘা পৌরসভার সেবা বৃদ্ধি ও কর কমানোর দাবিতে চলা মানববন্ধনে হামলা চালিয়ে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। গুরুতর আহত বাবুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক। বাঘা পৌরসভার মেয়র ও তার অনুসারীরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা গেটের সামনে গতকাল সকাল ১০টায় মানববন্ধন চলাকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাঘা পৌর সদর। এতে আহত হন কমপক্ষে ২০ জন।  প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথম থেকেই পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে অতিরিক্ত পুলিশ এসে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গুরুতর আহত বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মেয়র ও তার অনুসারীরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা চালিয়েছে।  স্থানীয়রা জানান, বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাস আলীর দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারী কর্মকান্ডের প্রতিবাদে সচেতন নাগরিক কমিটির ব্যানারে মানববন্ধন ডাকে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সকালে মানববন্ধন শুরু হলে তাতে হামলা চালান আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়ে। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হঠাৎ করেই মেয়র আক্কাস আলী ও তার অনুসারীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আক্কাস আলী হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে জখম করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলকে। উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল ইসলাম পিন্টু জানান, পৌর মেয়র আক্কাস আলী পৌরকর বৃদ্ধি করে নাগরিক ভোগান্তি বাড়িয়েছেন। তারই প্রতিবাদে মানববন্ধন ছিল। সেখানে হামলা চালানো হয়।  এ ব্যাপারে পৌরমেয়রের বক্তব্য নিতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। রাজশাহীর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, আগে থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এমন ঘটনা ঘটল। পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একজনের অবস্থা গুরুতর। রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও আড়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে দেখতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আবদুল ওয়াদুদ দারা। এ সময় তিনি বলেন, যারা দলের কোনো নেতার প্রশ্রয়ে, দলের নেতার ওপর এমন নৃশংস হামলা চালিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মাথায় গুরুতর জখম করা হয়েছে। প্রাথমিক অস্ত্রোপচার শেষে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর