সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
কী পেল বাংলাদেশ

ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা তৈরি

--- পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী

গৌতম লাহিড়ী, নয়াদিল্লি

ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা তৈরি

বাংলাদেশে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ের ধারাবাহিকতার অংশ। এই সফরে বাংলাদেশ ও ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা তৈরি হয়েছে। সফরের ফলাফল দুই দেশের মানুষের জন্যই সুফল বয়ে আনবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া 

এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, এবারের সফরে তিস্তা অববাহিকায় পানি সংরক্ষণ ও নদীর গভীরতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশকে ভারতের সহযোগিতা করার প্রস্তাব অত্যন্ত ইতিবাচক। যেহেতু পানিবণ্টন চুক্তি করা যাচ্ছে না, বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের এই প্রকল্পে অভিনবত্ব আছে। বাংলাদেশের উচিত হবে ভারতের প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো। তিনি বলেন, তিস্তাসহ সব নদীর পানির সংকট সর্বজনবিদিত। তাছাড়া এই নদীর অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা যায় না। একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে পানিনির্ভর কৃষিও বাড়ছে। অথচ পানির প্রবাহ বাড়ছে না। এই প্রেক্ষাপটে তিস্তা অববাহিকায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উত্তরবঙ্গের মানুষ উপকৃত হবেন। সাবেক এই হাইকমিশনার বলেন, এই প্রস্তাবে চীনের আগ্রহ আছে। অত্যন্ত স্পর্শকাতর সীমান্ত কাছাকাছি হওয়ায় চীনের অংশগ্রহণে ভারতের আপত্তি আছে। বাংলাদেশ ভারতের এই উদ্বেগের বিষয়ে সচেতন। এই জন্য এই প্রকল্পে চীনের তুলনায় ভারতের প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত। তিনি বলেন, এবারের সফরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা দুই দেশের মানুষের জন্যই সুফল বয়ে আনবে। বিদ্যুতের কানেকটিভিটিতে নেপাল ও ভুটানকে যুক্ত করে আঞ্চলিক সহযোগিতার যে নতুন ভিত্তি তৈরি হয়েছে তাতে বাংলাদেশের বিদ্যুতের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করা যাবে।

পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, জনতার মধ্যে আস্থা বাড়ানোর জন্য ই-মেডিকেল ভিসা বিরাট স্বস্তি দেবে। দ্রুত চিকিৎসার দাবি মেটাতে ভিসার যে সমস্যা ছিল তা অনেকাংশে লাঘব হতে পারে। রেল কানেকটিভিটির জন্য যে সমঝোতা হয়েছে তাতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সেবা উন্নত হবে। তিনি আরও বলেন, গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়নের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির বিষয়। ২০২৬ সালে ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তি মেয়াদোত্তীর্র্ণ হবে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যা বাংলাদেশের সামরিক নীতি। কিন্তু একে এড়িয়ে সহযোগিতা সম্ভব। সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ থেকে বেসামরিক সহযোগিতা গড়ে উঠতে পারে। তবে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দিন ধরেই চীনের ওপর নির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতা পরিবর্তন করতে পারে ঢাকা। এক কথায় এই সফর বাংলাদেশ ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা তৈরি করেছে। এর বাস্তবায়নে দুটি দেশই উপকৃত হবে।

সর্বশেষ খবর