নিহত ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিনকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ জন্য মার্কিন দূতাবাস ও ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই তাকে কারাগারে কেন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদে যাবতীয় তথ্য পাওয়া গেছে বলেই সাইদুল করিম মিন্টুকে রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও তাকে রিমান্ডে আনা হবে। তিনি আরও জানান, আনার কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন অসুস্থ। তিনি সুস্থ হলেই ডিএনএ পরীক্ষার জন্য কলকাতা যাবেন।
মিন্টুকে গ্রেফতারের পর থেকে ডিবি কোনো চাপে আছে কি না জানতে চাইলে ডিবি প্রধান হারুন বলেন, মতিঝিলের টিপু হত্যা, কামরাঙ্গীরচরের শিল্পপতি হত্যাকান্ড ও বুয়েটের ফারদিন হত্যাকান্ডসহ অনেক ক্লুলেস হত্যাকান্ড ঢাকা শহরে ঘটেছে। ডিবির চৌকশ টিম প্রতিটি হত্যাকান্ডের মোটিভ বের করেছে। এমপি আনার কলকাতায় হত্যাকান্ডের শিকার হন। এই হত্যাকান্ডের ক্লু বের করতে ডিবি পুলিশের দল রাত-দিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের টিম নেপালে গিয়েছে এবং আমাদের তথ্যের ভিত্তিতে নেপালে সিয়াম গ্রেফতার হয়েছে। এ ছাড়া কলকাতায় গিয়েও আমরা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি আলামত উদ্ধারে। এই হত্যাকান্ডের মূল কিলার শিমুল ভুঁইয়াসহ আরও অনেককে আমরা গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে চারজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমরা যদি চাপ অনুভব করতাম, তাহলে আমাদের এত ‘অ্যাচিভমেন্ট’ হতো না। তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, কোনো চাপ নেই এই মামলার তদন্ত কাজে। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন নিরপেক্ষভাবে মামলার তদন্ত করা হয়। ডিবি নিরপেক্ষভাবে এ মামলার তদন্তকাজ করছে। মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না এবং কাউকে অযথা ডাকাডাকি করা হবে না। সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। আদালতে স্বীকারোক্তিতে গ্যাস বাবু বলেছেন, মিন্টু তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে কোথাও ছুড়ে ফেলেছেন। এই মোবাইল ফোনগুলো উদ্ধারে ডিবি পুলিশ কোনো তৎপরতা চালাচ্ছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আলামত নষ্ট করার তথ্য আমরাও জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আদালতে একটি চিঠি দিয়েছি। যেহেতু গ্যাস বাবুর মোবাইলে ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে, যদিও দুইপক্ষের কাছে ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে এর মধ্যে এক পক্ষের ডিজিটাল এভিডেন্স আমরা পেয়েছি। গ্যাস বাবুকে আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব এবং মোবাইলগুলো কোথায় ফেলে দিয়েছেন সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
