শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে শিক্ষকরা

পেনশন স্কিম বাতিল দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে শিক্ষকরা

অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে ৩০ জুন পূর্ণদিবস এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক সমিতি। গতকাল তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের মূল ফটকে তারা অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আনায় তা প্রত্যাখ্যান করে বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মবিরতিসহ নানা ধরনের আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এতদিন ধরে শিক্ষক সমিতির কর্মবিরতি ছিল অর্ধ দিবসের। শিক্ষকরা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়া চলমান পরীক্ষাসমূহ ছিল এই কর্মসূচির আওতামুক্ত। তবে আগামী ৩০ জুন থেকে দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসবে বলে জানান শিক্ষকরা। ৩০ জুন থেকে পূর্ণদিবস  এবং ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ সময় শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষাসহ কোনো দাফতরিক ও একাডেমিক কাজে অংশ নেবেন না বলে জানান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকই ক্লাসে যাবেন না। কোনো দাফতরিক কাজে অংশ নেবেন না। আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া প্রত্যয় স্কিম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। জাবি প্রতিনিধি জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলের দাবিতে এবার সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা। আগামী ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। এ ছাড়া, ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও আইবিএ বিভাগের অধ্যাপক মো. মোতাহার হোসেন। চবি প্রতিনিধি জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ১২টায় চবি প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষক সমিতি। এ সময় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সবচেয়ে প্রখর মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে সুযোগ সুবিধা রয়েছে এগুলো কর্তন করা হলে মেধাবী শিক্ষার্থীরা কখনো এ পেশার দিকে আকৃষ্ট হবে না। মেধাবী শিক্ষার্থীরা যদি এ পেশায় না আসে তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মেধাবী হিসেবে বেড়ে উঠবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী বলেন, শিক্ষকদের প্রাপ্য পেনশন থেকে বঞ্চিত করে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় নিয়ে আসা একটি গভীর চক্রান্তের ফসল। এ স্কিম চালু হলে আগামীতে মেধাবী শিক্ষকরা এ পেশায় আসতে অনীহা প্রকাশ করবে। খুলনা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গতকাল খুলনায় তৃতীয় দিনের মতো অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালিত হয়। কর্মবিরতি চলাকালে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. এস এম ফিরোজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রকিবুল হাসান সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন প্রফেসর ড. অনুপম কুমার বৈরাগী, প্রফেসর ড. দেবেশ দাস, প্রফেসর ড. মো. ইউনুস আলী ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোর্ত্তজা আহমেদ। একইভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কুয়েট শিক্ষক সমিতি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. আবদুল হাসিব। সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা বক্তৃতা করেন।

সর্বশেষ খবর