শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিল্পকলায় মহাকালের সুরেন্দ্র কুমারী

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিল্পকলায় মহাকালের সুরেন্দ্র কুমারী

শিল্পকলা একাডেমিতে মঞ্চায়ন হলো ‘সুরেন্দ্র কুমারী’। এটি মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজিত ৪৪তম নাটক। গতকাল সন্ধ্যায় একডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। মধ্যযুগের মহুয়া, মলুয়া, চন্দ্রাবতী, কমলা, কারকুন দাসী, কাজলরেখা, মদিনা, আয়না, কাঞ্চনমালা, রাধার বিরহ ও বঞ্চনার গল্প উপজীব্য করে রচিত হয়েছে নাটকটি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান রচিত নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন শামীম সাগর। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবু আজাদ, শুভ্র মানিক, ইকবাল চৌধুরী, পলি বিশ্বাস, শিবলী সরকার, কানিজ ফাতেমা লিসা, চৈতী সাথী, রাজীব দেবনাথ, কাজী তারিফ, স্বপ্নীল, রাকিব হাসান, উইলিয়াম নিক্সন ভিকী, আবদুল কাইয়ুম, নীলমনি বাবু, কামরুজ্জামান সবুজ, শংকর কুমার ধর ও মীর জাহিদ হাসান।

অতীত মন্থনকারী এক কবির আহ্বানে মঞ্চের ধুমেল আলোর অন্তর খুঁড়ে উদ্ভাসিত হয় সুরেন্দ্র কুমারী। নীল নক্ষত্রের কুয়াশাকণা কলমে মেখে সুরেন্দ্রর প্রতি অশ্রুসিক্ত কবি প্রচলিত গাঁথা নবতর শিল্পরীতিতে বয়ান করতে চায়। যেখানে আখ্যানের অন্তে সুরেন্দ্রর আত্মহত্যা রুখে দেওয়া হবে। এক ঝড়ের রাত ফুরানো ভোরে জমিদার যতীন্দ্রনাথের ঘোড়ার পিঠে বিষক্রিয়ায় মৃত যতীন্দ্রকে নিয়ে ফিরে আসে। সন্তানসম্ভবা রাজমাতার হুংকারে পরগনা কম্পমান। সন্দেহভাজন হীরাচূড় মতিবাঈয়ের প্রাসাদ পুড়িয়ে দেয় সৈন্যরা। সুরেন্দ্র কুমারীর জন্মের পর থেকেই রাজমাতা তাকে সব ধরনের সমরশাস্ত্রে প্রশিক্ষণ দেয়। নারীর সহজাত প্রবৃত্তি সুরেন্দ্রর জন্য ছিল নিষিদ্ধ। এদিকে শিবলিঙ্গে পূজা দিতে গিয়ে মন্দিরের ঈষৎ অন্ধকারে দেখা পুরোহিতের শিষ্য আনন্দনাথের খোলা পিঠ তাকে নিরন্তর হাতছানি দেয়। নিজেই নিজের প্রবৃত্তির বিপরীতে দাঁড়ায় সুরেন্দ্র। সে মনোযোগী হয় পরগনার পর পরগনা দখলে। আকস্মিক সে এক বীভৎস সত্য আবিষ্কারের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করে আনন্দনাথের। সুরেন্দ্র সব বিপত্তি অতিক্রম করে আনন্দকে নিয়ে পালিয়ে যায় গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে মতিচূড় বাঈয়ের পোড়া প্রাসাদে। সুরেন্দ্রর মুখোমুখি হয় হীরাচূড় মতিবাঈয়ের ছায়াশরীর। এক ভয়ংকর গোপন উন্মোচিত হয় সুরেন্দ্রর সম্মুখে। ক্ষমতার হাতছানি মানুষকে কেমন বদলে দেয় মানুষের ভিতর থেকে মানুষটাকেই কেমন কেঁচে নিংড়ে বাইরে ফেলে দেয়, এ উপলব্ধি নাট্যান্তে সুরেন্দ্রকে এক দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনীত করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর