শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যা বলল মার্কিন প্রতিবেদনে

প্রতিদিন ডেস্ক

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে ধর্মপালনের ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা এবং বৈষম্যের দিক তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশের সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হলেও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সমুন্নত রাখা হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে ধর্মীয় বৈষম্য। বলা হয়েছে সব ধর্মের মানুষের জন্য সমানাধিকার প্রতিষ্ঠার কথা। দেশটিতে বিভিন্ন ধর্মের জন্য রয়েছে আলাদা পারিবারিক আইন।

আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা বলেছেন, আহমেদনগরে গত বছরের মার্চে তাদের বার্ষিক সম্মেলনে  শত শত লোক হামলা চালায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং অন্য সরকারি কর্মকর্তারা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সহিংসতায় দুজনের মৃত্যু হয়, আহত হন অনেকে। এ ছাড়া আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েক শ বাড়িঘরে লুটতরাজ ও ভাঙচুর চালানো হয়। হামলা চালানো হয় আহমদিয়াদের একটি মসজিদ ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও। ওই ঘটনার পর পুলিশ কয়েক হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে। গ্রেফতার করা হয় সহিংসতার কথিত উসকানিদাতাসহ ২ শতাধিক ব্যক্তিকে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা অব্যাহতভাবে বলেছেন, মুসলিম জনগোষ্ঠীর ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার কারণে’ ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠী, বিশেষ করে হিন্দুধর্মের লোকজনকে নিশানা করে সরকার প্রায়ই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো আইনের প্রয়োগ করেছে।

বেশিরভাগ ঘটনায় ফেসবুকে কথিত অবমাননাকর মন্তব্য করায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যদিও প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ঘটনার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তেমনটা নেওয়া হয়নি। মুসলিম ধর্মীয় নেতারা বলেন, সরকার মসজিদে ইমাম নিয়োগ ও অপসারণে প্রভাব খাটিয়ে গেছে। দেশজুড়ে ইমামেরা তাঁদের খুতবায় কোন বিষয়বস্তু তুলে ধরবেন, এ বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এদিকে মুসলিম ধর্মীয় নেতারা বলেছেন, সরকার মসজিদে ইমাম নিয়োগ ও অপসারণে প্রভাব খাটিয়ে গেছে। দেশজুড়ে ইমামেরা তাঁদের খুতবায় কোন বিষয়বস্তু তুলে ধরবেন, এ বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষায় সরকারের দেওয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় বিশেষ আইন কার্যকর করা, সরকারি চাকরিতে তাঁদের জন্য কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনাসহ বিভিন্ন দাবিতে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় সরকার অক্টোবরের মধ্যে একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ঘোষণা দেয়; কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত এসব বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। এ ছাড়া রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সরকারের শ্রদ্ধাবোধের মাত্রার বিষয়, সহিংসতায় দায়ী ব্যক্তিদের সাজা দিতে ব্যর্থতা, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক, ধর্মীয় কর্মকান্ডে নিয়ন্ত্রণ, সংখ্যালঘুদের প্রতি ‘বৈষম্য’ ও অন্যান্য বিষয়।

সর্বশেষ খবর