শনিবার, ২৯ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংরক্ষণের অভাবে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

নজরুল মৃধা, রংপুর

সংরক্ষণের অভাবে ৫০ কোটি টাকার আম নষ্ট

রংপুরে প্রতি বছর দুই থেকে আড়াই শ কোটি টাকার হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি হয়। এর বাইরে সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে এবং বিভিন্নভাবে অপচয়ের কারণে প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকার বেশি আম নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া কাঁঠাল, লিচু, আনারস, পেঁপে ইত্যাদি ফল গড়ে মোট উৎপাদনের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে রংপুরে একটি ফল সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি উঠলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি সরকার। তবে সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুস শহীদ রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের মেলা উদ্বোধন করতে এসে কথা দিয়েছেন মিঠাপুকুরে আম ও সবজি সংরক্ষণে একটি বিশেষায়িত হিমাগার করা হবে। এতে অনেকে আশার আলো দেখছেন। রংপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর জেলায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙার ফলন হয়েছে প্রায় পৌনে ২ হাজার হেক্টরে। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে গড়ে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন। সে হিসেবে এবার আমের উৎপাদন আশা করা হচ্ছে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন, অর্থাৎ ৩৫ লাখ কেজির বেশি। প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে আড়াই শ কোটি টাকার ওপরে আম বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় প্রতি বছর আমের ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। যার বাজারমূল্য ৫০ কোটি টাকার ওপরে।

এ ছাড়া কাঁঠাল ৪০ থেকে ৪৩, কলা ২০ থেকে ২৪, লিচু ২০ থেকে ২৪, আনারস ৪০ থেকে ৪৩ ও পেঁপে ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ সঠিকভাবে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয় প্রতি বছর। হাঁড়িভাঙা আমের ফলন ৮০ শতাংশের বেশি হলেও ফজলি, কেরোয়া, এছাহাক তেলি, ছাইবুদ্দিন, আশ্বিনী, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, কলিকাতা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপলি, সাদা রচি, চোচা, আঁটিসহ হরেক প্রজাতির আম রয়েছে। তবে হাঁড়িভাঙার চাহিদাই বেশি। একটি হাঁড়িভাঙা আমের ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এখন প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে কদিন পর এ আমের দাম দেড় শ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। রংপুরের বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক আবু সায়েম বলেন, ‘মৌসুমের সময় আমাদের দেশের অনেক ফল ও সবজি সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। মৌসুমে অধিক ফল ও সবজি উৎপাদনের ফলে কৃষক অনেক সময় ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়। এ ছাড়া কৃষক সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি না জানায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে আশার আলো সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী কথা দিয়েছেন মিঠাপুকুরে বিশেষায়িত একটি হিমাগার নির্মাণের। হিমারগারটি নির্মাণ করা হলে এ অঞ্চলের কৃষক আম, সবজিসহ বিভিন্ন ফল এখানে সংরক্ষণ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে ন্যায্যমূল্যও পাবেন।’

সর্বশেষ খবর