মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

৩৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী গত অর্থবছরের জুন মাসে প্রবাসীরা ২৫৪ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন; যা ৩৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালের জুনে ২১৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রবাসীরা বেশি অর্থ দেশে পাঠানোয় প্রবাসী আয় বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ডলারসংকট কাটিয়ে উঠতে ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ এবং নিয়মকানুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেওয়া ছাড়ের সুফল মিলছে প্রবাসী আয়ে। আগের ২৪ মাস পর গত অর্থবছরে প্রবাসীরা সর্বোচ্চ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আর এক বছর আগের তুলনায় প্রবাসী আয় বেড়েছে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৩৯১ কোটি ডলার। যা ২৪ মাস পর সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছিলেন। একই সঙ্গে ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছর প্রবাসীরা ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। আগের ২০২১-২২ অর্থবছর পাঠিয়েছিলেন ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার। মহামারি করোনার কারণে অনেক প্রবাসী তাদের সঞ্চিত অর্থ দেশে পাঠাতে শুরু করায় পরপর দুই বছর উচ্চ রেমিট্যান্স আসে। ফলে ২০২১ সালে তা ২২ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। তখন ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের রিজার্ভ ছিল বাংলাদেশের।

২০২১ সালে রিজার্ভ থেকে শ্রীলংকাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর পর দেশে ডলার সংকট তৈরি হতে থাকে। বিশ্বব্যাপী তৈরি হওয়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সুদহার বাড়ানোর ফলে সংকট তীব্র হয়।

আমদানির তুলনায় রপ্তানি কম হওয়ার পাশাপাশি রেমিট্যান্সে ডলারের দাম কম হওয়ার বড় ধাক্কা লাগে প্রবাসী আয়ে। ডলারের দাম বেঁধে দেওয়ার কারণে প্রবাসীরা অবৈধ পথে দেশে অর্থ পাঠাতে থাকেন। এমতবস্থায় প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়াতে নানা রকম উদ্যোগ নেয় সরকার। পাশাপাশি যে কোনো ধরনের অর্থ বৈধপথে দেশে আনার ক্ষেত্রে নিয়মকানুন আছে, সেটা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রবাসী আয়ে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশে প্রবাসী আয় প্রথমবারের মতো ৫০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে ২০০৬ সালে। ১ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায় তার তিন বছর পর ২০০৯ সালে। আর ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স হয় ২০১৫ সালে। যদিও দুই বছর পর প্রবাসী আয় আবার ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের ঘরে নেমে আসে। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স আবার ১ হাজার ৫ কোটি ডলার ছাড়ায়। ২০১৯ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৩৬৪ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে তা ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ওই বছর রেমিট্যান্স এসেছিল ২১ দশমিক ৭৫২ বিলিয়ন ডলার।

সর্বশেষ খবর