বুধবার, ৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভারতে চিকিৎসা ভিসায় বাংলাদেশির সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়া বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা ২০২৩ সালে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ভারত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মেডিকেল ভিসা দেয় ৩,০৪,০৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভিসা দেওয়ার হার বেড়েছে প্রায় ৪৭.৯ শতাংশ। ওই অর্থবছরে মেডিকেল ভিসা পেয়েছেন ৪,৪৯,৫৭০ জন বাংলাদেশি। সেই প্রেক্ষিতে ভারতের অন্য প্রতিবেশী দেশ- মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং মিয়ানমার থেকে চিকিৎসা করতে আসা তুলনামূলকভাবে কম। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা  সরকারি তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ২০২৩-২০২৪ সালে ভারত শ্রীলঙ্কান নাগরিকদের জন্য কেবলমাত্র ১,৪৩২টি মেডিকেল ভিসা দিয়েছে, তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ১১ শতাংশ কম, ২০২২-২৩ সালে ভিসা দেওয়া হয়েছিল ১,৬২২ জনকে। ২০২৩-২০২৪ সালে মিয়ানমারের নাগরিকরা ৩,০১৯টি মেডিকেল ভিসা পেয়েছেন, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি, মেডিকেল ভিসা প্রদানের সংখ্যাটা ছিল ২,৯০৪। ২০২৩-২৪ সালে মালদ্বীপের ১,৬৪৫ জনকে মেডিকেল ভিসা দেওয়া হয়েছিল, তার আগের অর্থবছরে সেই সংখ্যাটা ছিল ১,৪৪১। পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য ২০২৩-২৪ সালে মাত্র ৭৬টি মেডিকেল ভিসা ইস্যু করা হয়েছিল, তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ সালে মেডিকেল ভিসা দেওয়া হয়েছিল ১০৬ জনকে। ভারতে বাংলাদেশি দর্শনার্থীদের বৃদ্ধির কারণে বিমান সংযোগেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমান পরিষেবা বাড়িয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। ২০২৩ সালের জুন মাসে সপ্তাহে যেখানে তিনটি ফ্লাইট চলত এখন প্রতি সপ্তাহে ১৪টি বিমান চলাচল করছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে ভারত বাংলাদেশ রুটে ছোট কম আসনের (narrow body) যাত্রীবাহী বিমান চালায় এয়ার ইন্ডিয়া। সেক্ষেত্রে এয়ার ইন্ডিয়ার একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ বলেছেন যে ভারত-বাংলাদেশ রুটে যাত্রী চাহিদা এত বেশি যে তারা প্রশস্ত (widebody) বিমান চালালে সেটাও ভর্তি হয়ে যেত। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরেও চিকিৎসা পর্যটনকে আরও সহজ করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয় ভারত সরকার। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভারত ই-মেডিকেল ভিসা চালু করবে বলে শনিবার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের এ ঘোষণায় ভারতে চিকিৎসা করতে আসা বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্স (PWC) ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর (হেলথ কেয়ার) প্রীত মাতানি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে চিকিৎসার জন্য আসেন তারা মূলত স্বল্প অর্থে চিকিৎসা পরিষেবা, জটিল রোগের জন্য উচ্চ মানের চিকিৎসা পরিষেবার কারণে ভারতে আসেন, যেগুলো স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় না। পরশ হেলথের গ্রুপ চিফ অপারেটিং অফিসার স্যান্টি সজন বলেছেন, আগে বাংলাদেশি রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা নিতে প্রায়শই দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে চলে যেতেন। কিন্তু কভিড বিধিনিষেধের কারণে তারা অনেকেই পশ্চিমবঙ্গের দিকে ঝুঁকেছেন। বর্তমানে চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে তাদের কাছেই পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে কলকাতা। মূলত পেডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, রেনাল কেয়ার, জটিল অস্ত্রোপচার, ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি এবং রোবোটিক জয়েন্ট প্রতিস্থাপনের জন্য কলকাতার হাসপাতালগুলোয় ভিড় জমান বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকরা।

সর্বশেষ খবর