শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে নিহত চার বাংলাদেশি

নওগাঁ প্রতিনিধি

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের মুসাসানাইয়া এলাকায় একটি সোফা তৈরির কারখানায় অগ্নিকান্ডে নিহত হয়েছেন চার বাংলাদেশি। এর মধ্যে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রয়েছেন তিনজন। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে এ তিনজনের পরিবারে চলছে মাতম। নিহতরা হলেন আত্রাইয়ের তেজনন্দি গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), শিকারপুর গ্রামের সাহাদ আলীর ছেলে এনামুল হোসেন (২৫) ও দিঘা স্কুলপাড়া গ্রামের কবেজ আলীর ছেলে শুকবর রহমান (৪০)। বুধবার সৌদির স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা নাগাদ অগ্নিকান্ড ঘটে বলে জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। গতকাল আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্চিতা বিশ্বাস বলেন, ‘সৌদিতে আগুনে পুড়ে তিনজনের নিহতের খবর পেয়েছি। তাদের পরিবারের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া লাশ দেশে ফেরাতে এবং সরকারি কোনো সুযোগসুবিধা থাকলে তা পৌঁছাতে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’ সরেজমিনে তেজনন্দি গ্রামের ফারুক হোসেনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, গ্রামজুড়েই কান্নার রোল পড়ে গেছে। ফারুকের স্ত্রী-দুই সন্তানকে যেন কেউ থামাতেই পারছেন না। ফারুকের ভাতিজা পিন্টু আলী বলেন, ‘চাচা গার্মেন্টসে কাজ করতেন। ছয় বছর আগে ধারদেনা করে সৌদি আরবে যান। কিন্তু যাওয়ার পর সেখানে নানা সমস্যার মধ্যে পড়ে যান। প্রায় আট মাস আগে স্থায়ীভাবে সোফা তৈরির কারখানায় যোগ দেন। এরই মধ্যে বুধবার রাত ১০টায় ফোনে জানতে পারি কারখানায় আগুনে তিনি নিহত হয়েছেন।’ দিঘা গ্রামের নিহত শুকবর আলীর জামাই বিদ্যুৎ হোসেন জানান, ‘তার শ্বশুর কৃষিশ্রমিক ছিলেন। আড়াই বছর আগে একমাত্র সম্বল ১১ শতক জায়গা বিক্রি করে তার সঙ্গে ধারদেনার টাকায় সৌদি আরবে যান। এখন পর্যন্ত ধারদেনার টাকা শোধ করতে পারেননি। শুকবরের দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে শামিম হোসেন প্রতিবন্ধী। তার মাথা গোঁজার একমাত্র বাড়ির ৩ শতক জায়গা ছাড়া আর কোনো জমি নেই। শ্বশুর শুকবর আলীই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

শিকারপুর গ্রামের নিহত যুবক এনামুলের চাচা জাহিদুল ইসলাম জানান, এনামুল গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন। সুখের আসায় ঘর বাঁধতে ধারদেনা করে সৌদি আরবে যান। সেখান থেকে কেবল রোজগারের টাকায় ধারদেনা শোধ করে ইটের বাড়ি নির্মাণ করছেন। আগামী বছর নাগাদ দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিল। কিন্তু তা তার ভাগ্যে সইল না।

সর্বশেষ খবর