শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

পদমর্যাদা নেই ছয় সিটি মেয়রের

♦ মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনে প্রত্যাশা বেড়েছে বঞ্চিতদের সরকারি অনুষ্ঠানে বিড়ম্বনা কমবে ♦ পদমর্যাদা দেওয়া ন্যায়সংগত : সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব

ওয়াজেদ হীরা

দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মধ্যে ১০টিতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদধারী নেতা মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাকি দুজনের একজন জাতীয় পার্টির এবং একজন স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় ১০ জন মেয়রদের মধ্যে দুজন মন্ত্রী মর্যাদা এবং বাকি চারজন প্রতিমন্ত্রী পর্যাদা পেয়েছেন। সর্বশেষ রাজশাহী ও খুলনার মেয়রকে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদা দিয়েছে সরকার। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের বাকি চার বিজয়ীসহ অন্যরাও প্রত্যাশা করছেন এমন সম্মানের। যাদের পদমর্যাদা দেওয়া হয় তারা নিজ নিজ পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে সরকার নির্ধারিত পদমর্যাদার পাশাপাশি বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। ছয় সিটি মেয়রকে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়া হলেও বাকিদের আদৌ পদমর্যাদা দেওয়া হবে কি না তা জানেন না স্থানীয় সরকার ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী সিটি মেয়ররা মর্যাদা পায় না। প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলী ইমাম মজুমদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সিটি মেয়রদের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া উচিত। সবকিছুতে একটা মিল থাকা দরকার। যেহেতু তাদের পদ বড়, আলাদা মর্যাদা আছে, তাই পদমর্যাদা দেওয়া ন্যায়সঙ্গত। স্থানীয় গুরুত্ব, জনসংখ্যা বিবেচনা করে দেওয়া যায়। ছয়জনকে যেহেতু দেওয়া হয়েছে তাহলে অন্যদের বঞ্চিত রাখাটা অনুচিত।

সূত্র জানায়, পদ মর্যাদা না পাওয়া মেয়রদের মর্যাদার অমীমাংসিত বিষয়টির নিষ্পত্তি হলে প্রটোকলসহ সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবে। বিশেষ মর্যাদা নির্ধারিত হলে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রটোকল নিয়ে সমস্যারও সমাধান হবে বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার          বিশেষজ্ঞরা। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারিকৃত নতুন পদমর্যাদার ক্রম অনুযায়ী, অতিরিক্ত সচিবের একধাপ ওপর সিটি করপোরেশনের মেয়ররা। অথচ অনেক অনুষ্ঠানে সচিব বা সিনিয়র সচিবরা যান। অনেক শহরে সংস্থা প্রধান পদক্রমে মেয়রের ওপরে। এতে অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় সরকারি কর্মকর্তাদের। বিব্রত হতে হয় মেয়রদেরও। গত ৯ আগস্ট খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর আগে থেকেই ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস মন্ত্রীর পদমর্যাদা পেয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছে। যে ছয়জন মেয়র পদমর্যাদা পেয়েছেন এর বাইরে যারা মেয়র রয়েছেন তারা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও আছেন। ময়মনসিংহের তিনবারের মেয়র ইকরামুল হক টিটু মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি দায়িত্বে আছেন। কুমিল্লা সিটিতে প্রথমবারের মতো মেয়র হয়েছেন ডা. তাহসিন বাহার সূচনা। তিনি কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে এবং কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়াও প্রথমবারের বরিশাল সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ আওয়ামী যুবলীগের সদস্য। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বোন আমেনা বেগমের ছোট ছেলে। তিনি বর্ষীয়ান নেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই। সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রথমবার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়াও বাকি দুটি সিটির মধ্যে গাজীপুরের মেয়র জায়েদা খাতুন যিনি একজন গৃহিণী। রংপুর সিটির দুই মেয়াদের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এবং রংপুর মহানগরের সভাপতি। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকার যাকে পছন্দ করে তাকে এই মর্যাদা দেয়। এটি সরকারের ইচ্ছা। যে শহরে মেয়র থাকে তিনি ওই শহরের প্রধান ব্যক্তি। জনপ্রতিনিধিদের ওই মর্যাদা দিতে হবে সবাইকে। স্থানীয় সরকার সিস্টেমকে উন্নত করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর