শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ডা. সাবিরা হত্যার তদন্তে তিন বছরেও কিনারা নেই

প্রতিবেদন পেছাল ৩১ বার, স্বামীকে ঘিরেই সন্দেহ

মিনহাজুল ইসলাম

ডা. সাবিরা হত্যার তদন্তে তিন বছরেও কিনারা নেই

রাজধানীর গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপি খুন হওয়ার পর হত্যা মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২০২১ সালের ৮ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত। এরপর থেকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাতে পেছাতে গত ৮ জুলাই তিন বছর পূর্ণ হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানো হয়েছে ৩১ বার, কিন্তু তদন্ত কার্যক্রম এখনো দেখেনি আলোর মুখ।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগানের প্রথম লেনে ৫০/১ হোল্ডিংয়ের বাসার শয়নকক্ষ থেকে ডা. সাবিরার লাশ উদ্ধার করা হয়। তাকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের পর থেকে সন্দেহভাজন, সহকর্মী, স্বজনসহ অর্ধশতাধিক লোককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেও হয়নি হত্যার রহস্য উদঘাটন। এমনকি একমাত্র সন্দিগ্ধ আসামি সাবিরার দ্বিতীয় স্বামী সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা এ কে সামছুদ্দিন আজাদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদেও কোনো কিনারা মেলেনি। তবে তাকে ঘিরেই চলছে মামলার তদন্ত কার্যক্রম। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক জুয়েল মিঞা বলেন,  ‘এ মামলায় একমাত্র সন্দিগ্ধ আসামি সাবিরার স্বামী সামছুদ্দিন আজাদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যেসব তথ্য পেয়েছি, সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আমরা সাবিরার ছেলে ও তার ফ্ল্যাটমেট কানিজ সুবর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’ তিনি জানান, ‘তদন্ত করতে গিয়ে সম্প্রতি ডা. সাবিরার সঙ্গে স্বামী সামছুদ্দিন আজাদের একটা ডিভোর্স লেটার পাওয়া গেছে। এর সূত্র ধরে এখন তদন্ত কাজ চলছে।’ তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাবিরার স্বামী সামছুদ্দিন আজাদ সাবিরাকে বিয়ে করার আগে আরও দুটি বিয়ে করেছিলেন। তবে সাবিরার কাছে আগের দুই বিয়ের কথা তিনি গোপন করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। মামলার বাদী ডা. সাবিরার মামাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার বলেন, তিন বছরেও জানতে পারলাম না খুনের কারণ, পেলাম না বিচার। তবে পিবিআই বসে নেই, তারা কাজ করছে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। হয়তো আমাদের ভাগ্যটা খারাপ। এ কারণে রহস্য উদঘাটন হচ্ছে না। আমরা আশায় আছি। সাবিরার মা, ছেলে-মেয়েও বিচার চান। সাবিরার পরিবার সম্পর্কে রেজাউল হাসান বলেন, ছেলে আহমেদ তাজওয়ার কানাডায় পড়াশোনা করছে। মাঝে মধ্যে ফোন দিয়ে মামলার আপডেট জানতে চায়। আমার ফুফু (সাবিরার মা) সালমা রহমানও ফোন দিয়ে বলে, মামলার তো কিছু হলো না। সবাই আপডেট চায়, আমি কি আপডেট দেব? এদিকে সাবিরার মেয়ে নুসাইবা আনবার তার নানির (নিহতের মা) সঙ্গে থাকছে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। রেজাউল হাসান বলেন, নুসাইবার সব দেখভাল করছে নানি। নানি এখন মায়ের ভূমিকা পালন করছেন। নুসাইবার জন্য সাবিরার মায়ের মেয়ে হারানোর কষ্ট কিছুটা কমেছে। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ মে খুন হওয়ার পর ১ জুন সাবিরার মামাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার অজ্ঞাতদের আসামি করে কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা করেন। প্রথমে তদন্তের দায়িত্ব কলাবাগান থানা পুলিশকে দেওয়া হলেও একই বছরের ২২ আগস্ট তদন্তভার পায় পিবিআই।

সর্বশেষ খবর