রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হত্যার দাবি

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার আর্যগুহা ধুতাঙ্গবিমুক্তি বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে তারাছা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিহারের ভিতর থেকে অধ্যক্ষ ড. এফ দীপঙ্কর মহাথের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে রোয়াংছড়ি থানা ওসি পারভেজ আলী জানিয়েছেন। এফ দীপঙ্কর মহাথের ২০১৬ সাল থেকে ওই বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

লাশ উদ্ধারের সময় পাশের টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এফ দীপঙ্কর মহাথের নামে যে ফেসবুক পেজ রয়েছে, সেটির অ্যাডমিন হিসেবে রয়েছেন শিষ্য শান্তনু বড়ুয়া। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভান্তে (এফ দীপঙ্কর) প্রতিদিন সকাল ৮টায় কলিং বেল চাপেন। তখন আমরা ভান্তের সঙ্গে দেখা করতে যাই। কারণ ভান্তে যেখানে থাকেন, তিনি একাই থাকেন। বাইরে থেকে তালা দেওয়া থাকে এবং ভিতর থেকেও লক করে রাখেন ভান্তে।’ শান্তনু বড়ুয়া বলেন, ‘আজকে কলিং বেল না বাজানোর কারণে দুপুর সোয়া ১টায় আমরা তিনজন দরজার ছিদ্র দিয়ে তাকাই, তখন দেখি ভান্তে ঝুলন্ত অবস্থায় আছেন। তখনই বিষয়টি বিহার কমিটি ও পুলিশকে জানানো হয়।’

রোয়াংছড়ি থানা ওসি পারভেজ আলী বলেন, ‘কী কারণে ঘটনাটি ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, ‘এফ দীপঙ্কর মহাথের বিহারের কুটিরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলেও প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। মৃতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। এ সময় কুটিরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’ ময়নাতদন্ত শেষে আজ স্বজনদের হাতে লাশ হস্তান্তর করা হবে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এদিকে এফ দীপঙ্কর মহাথেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে রাত ৮টায় বন্দরবান শহরে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তার শিষ্যরা। সেখানে বক্তব্য দেন, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোজ বড়ুয়া, অসীম বড়ুয়া, লায়ন নিপু কান্তি বড়ুয়া, ইউপি সদস্য বিরলার তঞ্চঙ্গ্যা, প্রকৌশলী শুভ বিকাশ বড়ুয়া ও বিশ্বজিৎ বড়ুয়া। বক্তারা বলেন, দীপঙ্কর মহাথের অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ছিলেন। তার মতো ব্যক্তি আত্মহত্যা করতে পারেন না। এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এফ দীপঙ্কর মহাথের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালি বিষয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্বর্ণপদক পান। পরবর্তীতে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে ‘অশোক শিলালিপি’র ওপর তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর