শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাড়ছে শিশুর প্রতি ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা

তামিমকে হত্যার পর মুক্তিপণ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার আমবাগ মধ্যপাড়ায় শিশু তামিমকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন র‌্যাব-১ ও ১৪-এর সদস্যরা। তারা হলেন ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার পাউরিতলার মো. হাসান মিয়া ও কুশকান্দার মো. সাগর মিয়া। শুক্রবার মুক্তাগাছার কদুরবাড়ী থেকে হাসানকে এবং ফুলপুর উপজেলা থেকে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয় বছর  বয়সি মাদরাসাছাত্র সানজিদুল ইসলাম তামিমকে হত্যার পর ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল অপহরণকারীরা। তামিমের আপন চাচাতো ভাই অপহরণকারী সাগর। গতকাল রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১-এ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোসতাক আহমেদ। তিনি বলেন, তামিম ফুলপুর উপজেলার মাটিজাপুরের নাজমুল হোসেনের ছেলে। গাজীপুরের আমবাগে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তামিম বড়। ৭ জুলাই সন্ধ্যায় তামিম তার বাবা নাজমুলের প্লাস্টিকের ববিন কাটার গুদামে যায়। এ সময় হাসান ও সাগর হাতি দেখানোর কথা বলে তাকে তাদের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। পরে ওই বাসার বাথরুমের ভিতর দড়ি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ প্যাঁচিয়ে আটকে রাখে। হাসান ও সাগর তামিমের বাবার গুদামে কাজ করত। তামিমকে ছেড়ে দিলে সে বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দেবে এ ভয়ে ওইদিন রাতেই তামিমকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাসান ও সাগর। পরে লাশ আমবাগ মধ্যপাড়ায় তামিমদের ভাড়া বাসার পাশে একটি কলাবাগানের ভিতর ফেলে রাখে। এদিকে তামিম বাসায় ফিরে না এলে পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নেন। মসজিদে মাইকিং করে। কিন্তু কোথাও সন্ধান না পেয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি জিডি করা হয়। ৮ জুলাই সকালে তামিমের বাবা নাজমুলের মোবাইলে ফোন করে তামিমকে ফিরে পেতে নগদ ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। নাজমুল ১০ লাখ টাকা নিয়ে ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জায়গায় যান। কিন্তু অপহরণকারীরা তার সামনে আসেনি। ১০ জুলাই দুপুরে আমবাগের কলাবাগান থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে লোকজন সেখানে গিয়ে তামিমের অর্ধগলিত লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কোনাবাড়ী থানায় মামলা হয়।

র‌্যাব ছায়াতদন্তের মাধ্যমে আসামি শনাক্ত করে। একপর্যায়ে ১২ জুলাই হাসান ও সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তামিমকে হত্যার কথা স্বীকার করে। আসামি হাসান ও সাগর ঋণগ্রস্ত ছিল। এ ঋণ পরিশোধ করতে তামিমকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে তারা তামিমকে অপহরণ করে। কিন্তু তাদের চিনে ফেলায় অপহরণের দিনই হত্যা করে হাসান ও সাগর। সাগরকে একটি মোবাইল সিম দিয়েছিল হাসান। সেই সিম দিয়েই মুক্তিপণের টাকা চাওয়া হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর