শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বন্যা বিপর্যয়ে মুম্বাইয়ে সতর্কতা

কলকাতা প্রতিনিধি

টানা বৃষ্টির কারণে ভারতের একাধিক রাজ্যে জনজীবন বিঘ্নিত। রাস্তায় হচ্ছে অতিরিক্ত যানজট। কয়েক দিন ধরেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, হিমাচল প্রদেশ, আসাম, উত্তরাখ  রাজ্যে। ফলে রাজ্যে নদীর পানির স্তর বাড়ছে। তৈরি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। সে জন্য মুম্বাই নগরীতে গতকাল জারি করা হয়েছে ‘কমলা’ সতর্কতা। ইতোমধ্যেই গোটা ভারতে বৃষ্টি, বজ্রপাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে একাধিক মানুষের। চলতি বর্ষা মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যটিতে। আসাম রাজ্যেও কাছাড়, বরপেটা, কামরূপ, নগাঁও, ধুবড়ি, দারাং, বিশ্বনাথ, গোলাঘাটসহ রাজ্যের ২৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত। ব্রহ্মপুত্র নদসহ অন্যান্য নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১৪ লাখ মানুষ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ধুবড়ি জেলায়। এ জেলায় ২ লাখ ৪১ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার জন্য উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। খোলা হয়েছে একাধিক ত্রাণশিবির। মধ্য প্রদেশের অবস্থাও উদ্বেগজনক। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টি এবং বজ্রপাতে গড়ে প্রতিদিন তিনজন করে মারা যায় মধ্য প্রদেশে। এ রাজ্যে চলতি বছরের ১৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত বর্ষাজনিত কারণে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। সরকারি তথ্য বলছে, অত্যধিক বৃষ্টির কারণে ৪৪টি জেলার ২৬৮টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত, আহত প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ, দেড় শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, ৪৩৬টি গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে।

উল্টর প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। রাজ্যের ৯২৩টি গ্রামের প্রায় ১৮ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। দুর্গত মানুষদের উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে জাতীয় ও রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী। নিচু এলাকার মানুষদের অপেক্ষাকৃত উঁচু ও নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা  হয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত। রাজ্যের রিলিফ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত ৫৪ জনের মধ্যে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে, ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে এবং ২ জনের সাপের কামড়ে। রাপ্তি, সারদা, ঘাঘরা, বুধি রাপ্তি, কুয়ানোসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর পানির স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে ১৬টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার আকাশপথে বলরামপুর, শ্রাবস্তীসহ বন্যা কবলিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বন্যায় নিহত মানুষদের পরিবার পিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণও তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ভারতের বাণিজ্যনগরী মুম্বাই শহরে। একাধিক জায়গায় জলাবদ্ধতা শুরু হয়েছে; ফলে সৃষ্টি হয়েছে যানজট। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টা চলবে এই বৃষ্টিপাত। স্থানীয় প্রশাসনের তরফে শুক্রবার হলুদ সতর্কতা এবং শনিবার কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আন্ধেরি, যোগেশ্বরী, সিয়ন, ওরলিসহ একাধিক জায়গায় হাঁটু পানি জমে গেছে। মালাডে রীতিমতো শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত কোঙ্কন ও গোয়া, মধ্য মহারাষ্ট্রের ঘাট অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। শনিবার ও মঙ্গলবার এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে কেরালা এবং কর্ণাটকের উপকূলীয় এবং দক্ষিণাঞ্চল এলাকায়। শুক্রবার এবং শনিবার বৃষ্টি হতে পারে গুজরাটে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ইয়ানামের উপকূল অঞ্চলসহ তেলেঙ্গানা, মারাঠওয়াড়া, রায়ালসীমাতে।

সর্বশেষ খবর