শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী কণা এখন সর্পকন্যা!

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী কণা এখন সর্পকন্যা!

সাপ দেখলে ভয় পাওয়া স্বাভাবিক বিষয়। তবে পরিবেশ রক্ষায় সাপেরও ভূমিকা অনেক। তার পরেও সাপ দেখলে মেরে ফেলতে এগিয়ে আসে বেশির ভাগ মানুষ। এ ভয়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাপ রক্ষায় এগিয়ে এসে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন এক ছাত্রী।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী কামরুন নাহার কণা কাউকে সাপ মারতে দেন না। কোথাও সাপ দেখা গেলে উদ্ধার করে বনেজঙ্গলে ছেড়ে দেন। বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতাই তার মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও সাপ দেখা গেলে আগে সবাই মেরে ফেলতেন কিংবা মারার চেষ্টা করতেন। বর্তমানে কেউ আর সাপ মারেন না। সাপ দেখামাত্রই ফোন করে কামরুন নাহার কণাকে। দিনে কিংবা রাতে যেকোনো সময় হোক না কেন, কণা সেটিকে উদ্ধারের মাধ্যমে জীবন রক্ষা করেন। তার কাজ দেখে হাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাকে উপাধি দিয়েছেন ‘সর্পকন্যা’। এরই মধ্যে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স অনুষদের অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী কামরুন নাহার কণা ইতোমধ্যেই সর্প বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তিন বছর ধরে সাপ নিয়ে কাজ করছেন। ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন থেকে। শুধু সাপ সংরক্ষণ নয়, বন্যপ্রাণী নিয়েও কাজ করছেন। এ পর্যন্ত তিনি বিষাক্ত এবং নির্বিষ মিলে শতাধিক সাপ ধরেছেন। বিষ নেই এমন সাপের মধ্যে ঘরগিন্নি, সুতানলি, জলঢোঁড়া, দাঁড়াশ এবং বিষধর সাপের মধ্যে শঙ্খিনী, কালাচ, পাতিকালাচ, খৈয়াগোখরা, পদ্মগোখরাও আছে। তবে সবচেয়ে বেশি উদ্ধার করেছে শঙ্খিনী সাপ।  এ ব্যাপারে কামরুন নাহার কণা বলেন, করোনার প্রকোপের সময় গাইবান্ধার ফুলছড়ি গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। নদী এলাকায় সাপ দেখলেই মানুষজন মেরে ফেলে। মানুষের সাপের প্রতি নির্মম আচরণ দেখে খুব খারাপ লাগত। মনস্থির করি, পরিবেশের জন্য উপকারী এই প্রাণীরক্ষায় কাজ করব। এরপর ক্যাম্পাসে আসি। বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপগুলো খুঁজতে থাকি, যারা বাংলাদেশে সাপ নিয়ে কাজ করে। এরপর একটা গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হই।

 সেখানে ছয় মাস ক্লাস করি এবং পরীক্ষা দিই। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০২২ সাল থেকে সাপ নিয়ে কাজ শুরু করি। সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সেমিনার করছি। যেসব এলাকায় সর্পভীতি আছে সেটা দূরকরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর