সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

চার বিসিএস ঘিরে তদন্ত

বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য

সাখাওয়াত কাওসার

চার বিসিএস ঘিরে তদন্ত

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে বেরিয়ে আসছে ভয়ংকর সব তথ্য। এখন পর্যন্ত ২৭তম, ৩৩তম, ৩৫তম এবং ৪৬তম বিসিএস এর প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে গ্রেপ্তারকৃতদের জবানি থেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে ওইসব পরীক্ষায় পাস করে যারা বর্তমানে প্রজাতন্ত্রে কর্মরত রয়েছেন শিগগিরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে সিআইডি কার্যালয়ে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং  আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাজেদুল বলেছেন, পিএসসির এক শীর্ষ কর্মকর্তার খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন গ্রেফতার হওয়া উপ-পরিচালক আবু জাফর। তার মাধ্যমেই তিনি প্রশ্নপত্র পেয়েছেন নানা সময়।

জানা গেছে, ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের সমাধান হতো ঢাকার তিনটি বুথে। মিরপুর, মোহাম্মদপুর এবং সাভারের বুথে পরীক্ষার্থীদের দুই দিন আগে থেকেই রাখা হতো। বিশেষ নিরাপত্তা আয়োজনে ঘেরা ওইসব বুথেই হতো প্রশ্নের সমাধান। তবে প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষার জন্য আলাদা কন্টাক্ট হলেও এর বাস্তবায়ন করত দুটি গ্রুপ।

জানা গেছে, সাজেদুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসা পিএসসির সেই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও সরকারি অর্থ তছরুপের তদন্ত শুরু হয় ২০১৯ সালে। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর খুব ঘনিষ্ঠ তিনি। অভিযোগ রয়েছে, তার মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে গুরুতর ওই অভিযোগ থেকে রেহাই পান তিনি। এরপরই তিনি নিয়োগ পান পিএসসিতে। আবার এই কর্মকর্তা খুব ঘনিষ্ঠজন ছিলেন গ্রেফতার হওয়া উপ-পরিচালক আবু জাফরের। যদিও জাফর বারবার দাবি করেন তার অফিসের এক পিয়ন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তবে সাজেদুল তার বক্তব্যে দাবি করেছেন, জাফর বিভিন্ন সময় তাকে ডেকে প্রশ্নপত্রের ফাইল দিয়েছেন।

বহুল আলোচিত এ ঘটনায় গ্রেফতার ১৭ জনের মধ্যে সৈয়দ আবেদ আলীসহ ছয়জন প্রশ্নপত্র ফাঁস সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। তারা বলেছেন, তাদের হাত ধরে অনেকেই হয়েছেন বিসিএস ক্যাডার। সব ক্যাডারেই তাদের লোক রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার আবেদ আলী তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, ২৭তম পরীক্ষায় তার মাধ্যমে দুজন নিয়োগ পেয়েছেন। এ রকম অবস্থা হয়েছে ৩৩ এবং ৪৬ তম বিসিএস-এ। এর বাইরে বিভিন্ন নন-ক্যাডার এবং দ্বিতীয় শ্রেণির পরীক্ষাগুলোতেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট অপর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৪৬তম পরীক্ষায় মিরপুর এলাকায় সাজেদুলের বুথে ১০০ জন পরীক্ষার্থীকে রেখে প্রশ্নপত্র সলভ করা হয়। মোহাম্মদপুরের বুথে যারা ছিলেন তাদের বিষয়েও তারা কাজ করছেন। এর বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তারা পেয়েছেন। এগুলোর যাচাই-বাছাই চলছে। পলাতকদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগগিরই হয়তো প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ একজনকে গ্রেফতার করা হবে। তবে তার নাম বলতে রাজি হননি তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর