বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাতিল হতে পারে ৪৬ বিসিএস প্রিলি

সাখাওয়াত কাওসার

বাতিল হতে পারে ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। ঘোষণা দিয়ে ফের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টিও ভাবছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (বিপিএসসি)। তবে অপেক্ষা কেবল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রতিবেদনের। একই সঙ্গে বিশেষায়িত এ সংস্থাটির অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনেরও অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে, সিআইডির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি দল গত সোমবার বিপিএসসির ইউনিট-১২ পরিদর্শন করেছে। তথ্য সংগ্রহ করেছে ওই ইউনিটে কর্মরত স্টাফদের।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সিআইডির সাইবার পুলিশ বিভাগের বিশেষায়িত পুলিশ সুপার (বর্তমানে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) তৌহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল বিপিএসসি পরিদর্শন করেছে। সঙ্গে ছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা। তারা পিএসসির ইউনিট-১২ এর প্রধান পিএসসির সদস্য গোলাম ফারুকের সঙ্গেও কথা বলেন। ওই ইউনিটে কর্মরত কর্মকতা-কর্মচারীদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন তারা। সংগ্রহ করা হয়েছে ওই ইউনিটের অভ্যন্তরে সিসি ক্যামেরাগুলোর ফুটেজ। এ বিষয়ে গতকাল সিআইডির এস এস তৌহিদুল ইসলামকে কয়েক দফা ফোন করার পর রিসিভ করলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিপিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন ফোন রিসিভ করেননি। সূত্র বলছে, পিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য এবং তদন্তে এরই মধ্যে নানা উপাত্তের রীতিমতো বিব্রত সরকারের শীর্ষ মহল। তাদের মধ্যে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বিশেষ করে সৈয়দ আবেদ আলী এবং সাজেদুল ইসলামের জবানবন্দিতে পিলে চমকে ওঠার মতো তথ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলছেন, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেননি এমন আসামিরা রিমান্ডে এলে এবং পলাতক আসামিরা গ্রেপ্তার হলে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষায় পাস করে যারা বর্তমানে প্রজাতন্ত্রে কর্মরত রয়েছেন তাদের মধ্যে ২৭তম, ৩৩তম এবং ৩৫তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তবে এর আগে আরও দুটি পরীক্ষার বিষয়েও তারা তথ্য পেয়েছেন। সেগুলোও পর্যায়ক্রমে খতিয়ে দেখা হবে। তবে এরই মধ্যে যেসব কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে তাদের বিষয়ে যথাযথ প্রমাণ সংগ্রহের বিষয়ে কাজ করছেন তারা। তথ্যগুলো আরও যাচাইবাছাইয়ের পরই তাদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা হবে। ওই তালিকা কঠোর গোপনীয়তা বজায় রেখে সরকারের শীর্ষ মহলে জমা দেওয়া হবে। জানা গেছে, ৪৬তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হওয়ার বিষয়ে অনেক প্রমাণ গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এতে পিএসসিতে কর্মরত ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উঠে এসেছে। এর মধ্যে পিএসসির এক শীর্ষ কর্মকর্তার বিষয়টি রয়েছে। তিনি খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন গ্রেপ্তার উপ-পরিচালক আবু জাফরের। গ্রেপ্তার সাজেদুল এরই মধ্যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন যে, তার মিরপুরের বুথে ১০০ জন পরীক্ষার্থীকে রেখে ৪৬তম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখস্ত করনো হয়। তবে মোহাম্মদপুর ও সাভারে আরেকটি বুথ ছিল।

পলাতক যারা : পলাতক আসামিরা হলেন- পিএসসির সাবেক সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া, দীপক বণিক, খোরশেদ আলম, কাজী মো. সুমন, এ কে এম গোলাম পারভেজ, মেহেদী হাসান খান, গোলাম হামিদুল, মিজানুল রহমান, আতিকুল ইসলাম, এ টি এম মোস্তফা, মাহফুজ কালু, আসলামসহ অন্তত ৫০-৬০ জন।

 

 

সর্বশেষ খবর