রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থমথমে ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থমথমে ক্যাম্পাসে নেই শিক্ষার্থীরা

চলমান ছাত্র আন্দোলনের কারণে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ রেখেছে সরকার। আবাসিক হলগুলোও বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসগুলোয় ২০ দিন ধরে নেই কোনো একাডেমিক কার্যক্রম। শুনসান নীরবতা বিরাজ করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও থমথমে অবস্থা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই পরিস্থিতি। এদিকে হল ত্যাগ করার পর জাহাঙ্গীরনগরসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের তালা ভেঙে কিছু ছাত্র অবস্থান নিয়েছেন। চলতি মাসের শুরু থেকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরুর পর ক্যাম্পাসগুলোয় শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনও। শুরুতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলতে থাকলেও ৬ জুলাই দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। রাজধানীর শাহবাগ, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক, ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক, ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ বিভিন্ন মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এর পরই সারা দেশে শুরু হয় বাংলা                ব্লকেড। সর্বাত্মক ব্লকেডে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তাল হয়ে ওঠে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক অবরোধ শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। ১৫ জুলাই দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাসগুলো। এরপর প্রতিদিনই বিভিন্ন ক্যাম্পাসে হামলা, সংঘর্ষে অনেক শিক্ষার্থী আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার সারা দেশের স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। একই সঙ্গে বন্ধ ঘোষণা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংসহ অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সব কলেজও।

সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলেও স্বস্তি ফেরেনি শিক্ষাঙ্গনে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পরদিনও জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, বরিশালসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের নীলক্ষেতেও ঘটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

২০ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্লাস-পরীক্ষা না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিশ্চিতভাবেই সেশনজটের সম্মুখীন হচ্ছেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘৩০ জুন প্রথম সেমিস্টারের প্রথম পরীক্ষা দিয়েছি। ৩ জুলাই দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল।

 কিন্তু চলমান শিক্ষক আন্দোলনের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা। এরপর শুরু হয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা সামাল দিতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করল। আমাদের অনুষদে কোনো সেশনজট ছিল না দীর্ঘ বছর ধরে। কিন্তু চলমান অস্থিরতার কারণে সেশনজটে পড়ে গেলাম।’ এ ছাত্রী চলমান অস্থিরতা নিরসন করে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান সরকারের কাছে।

সর্বশেষ খবর