রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

কারফিউ শিথিলের দুই ঘণ্টা বাজার করার হিড়িক

নিজস্ব প্রতিবেদক

কারফিউ শিথিলের দুই ঘণ্টা বাজার করার হিড়িক

রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে কারফিউ। শুক্রবার রাত ১২টায় কার্যকর হওয়া কারফিউ গতকাল বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শিথিল ছিল। এই দুই ঘণ্টায় সড়কসহ অলিগলি সব জায়গায় মানুষের উপস্থিতি ছিল বেশি। বিশেষ করে কাঁচা বাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে কেনাকাটার হিড়িক ছিল। শঙ্কার মধ্যে সবাই প্রয়োজন অনুসারে কেনাকাটা সেরে নেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রামপুরা বাজারে দুপুর সাড়ে ১২টায় মানুষের ভিড়।  বিশেষ করে কাঁচাবাজারে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল। তারা পছন্দের তরকারি হুড়াহুড়ি করে কিনে নিচ্ছে। কারফিউ বিরতির সময় কম হওয়ায় মানুষকে এমন তাড়াহুড়া করে কিনতে দেখা যায়। আর দোকানিরাও দ্রুত সবজিগুলো তাদের দিচ্ছেন। তবে ক্রেতারা সবজির দাম বেশি বলে অভিযোগ করেছেন। মধুবাগ থেকে কাঁচাবাজার করতে এসেছেন ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, কারফিউ ঘোষণার পর বাসা থেকে বের হননি। পত্রিকায় দেখলাম দুই ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল, সে জন্য সময় অনুযায়ী বাজার করতে বের হয়েছি। মাছ ও তরকারি প্রয়োজনের চেয়ে একটু বেশি কিনে নিলাম। কারণ কখন আবার বের হতে পারব সেটা জানি না। তবে শিথিল হওয়াতে ভালো হয়েছে, মানুষ নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারবে। কারফিউর সুযোগে ব্যবসায়ীরা শাক-সবজির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা প্রতিটি সবজির দাম ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

একই অবস্থা দেখা গেছে মুদি দোকানে। প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল বেশি। ডিম, ডাল, আলুসহ প্রয়োজনীয় পণ্য বেশি কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। বিশেষ করে মেসে থাকা ব্যাচেলররা ডিম, আলু, ডালসহ অপচনশীল পণ্য বেশি করে কিনছেন। তারা বলছেন, জরুরি অবস্থায় মেসের বুয়া রান্নাবান্না করতে আসবে না। সে জন্য আমরা যা রান্না করতে পারি সেগুলো কিনেছি। রবিউল ইসলাম নামে এক দোকানি বলেন, কারফিউ শিথিল ১২টা থেকে শুরু হলেও আমি দোকান খুলেছি সাড়ে ১১টায়। কারণ শিথিলের সময় কম হওয়ায় পণ্যগুলো গুছিয়ে রাখতে আগে খুলেছি। যেন ক্রেতারা চাওয়া মাত্রই পণ্যগুলো তাদের হাতে দিতে পারি। তবে ক্রেতাদের বেশি উপস্থিতির কারণে কিছুটা হিমশিম খেতে হয়েছে। অন্য দিনের ১২ ঘণ্টার বেচাকেনা আজ (শনিবার) ২ ঘণ্টায় শেষ করতে হবে। একই অবস্থা দেখা গেছে মিরপুর ১০ নম্বরের মুদি দোকানগুলোতে। প্রতিটি দোকানে পুরুষের চেয়ে নারীদের উপস্থিতি ছিল বেশি। তাদের পাউরুটি, ডিম, মুড়িসহ অপচনশীল পণ্য বেশি কিনতে দেখা যায়।

ব্যতিক্রম নয় ফার্মেসিগুলোতেও। প্রতিটি ফার্মেসিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। বিশেষ করে বয়স্কদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ফার্মেসিতে কথা হয় ষাটোর্ধ্ব বয়সি আবদুল কাদেরের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে কারফিউ জারি ঘোষণার পর একটু চিন্তিত ছিলাম। পরে জানতে পারলাম বেলা ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে। সে জন্য সময় অনুযায়ী ডায়াবেটিস ও প্রেশারের ওষুধ নিতে আসলাম। কারণ নিয়মিত এসব ওষুধ খেতে হয়। একদিন না খেলে সমস্যা হয়ে যায়। সারা দিন বাসায় বসে থাকার কারণে সমস্যা একটু বেশি হচ্ছে। এ ছাড়া অনেককে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতেও দেখা গেছে। 

শুধু রামপুরা বাজার নয়, শান্তিনগর, মালিবাগ, মেরুল বাড্ডাসহ রাজধানীর সব বাজারে এই চিত্র দেখা গেছে। তবে ব্যতিক্রম দেখা গেছে মেরাদিয়া বাজারে। সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসিসহ নিত্যপণ্যের দোকান খোলা ছিল। বেলা ১২টার দিকে পুলিশের নির্দেশে সব দোকান বন্ধ হয়ে যায়।

সর্বশেষ খবর